সুনামগঞ্জ পৌর শহরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানের সময় ব্যবসায়ীররা হামলা চালিয়েছেন। এতে পৌরসভার চারজন কর্মচারী আহত হন। এ সময় পুলিশ সদস্যদেরও মারধর করা হয়। আজ বুধবার দুপুরে পৌর শহরের স্টেশন রোডে হক রেস্তোরাঁর সামনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উপস্থিতিতি এই হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলায় আহত সুনামগঞ্জ পৌরসভার চার কর্মচারী হলেন আনোয়ার হোসেন (২৮), আজিম উদ্দিন (৩০), শিপন মিয়া (২৭) ও আবদুল মান্নান (৩১)। তাঁরা জেলা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পৌর শহরকে যানজটমুক্ত করতে এবং শহরের সড়কগুলো প্রশস্ত করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকে শহরের সড়কের দুই পাশে থাকা অবৈধ স্থাপনা ও ভ্রাম্যমাণ দোকানপাট উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক ও সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের উপস্থিতিতে এই অভিযান শুরু হয়। এর ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসনের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশ, পৌরসভার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অভিযান শুরু করেন।
আজ দুপুরে শহরের স্টেশন রোড এলাকার হক রেস্তোরাঁর পাশে থাকা একটি অবৈধ ফলের দোকান তুলে দিতে গেলে ফল ব্যবসায়ীর জড়ো হয়ে অভিযান চালাতে বাধা দেন। একপর্যায়ে তাঁরা উত্তেজিত হয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে অভিযানে অংশ নেওয়া পৌরসভার কর্মচারীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় পুলিশ সদস্যদের কয়েকজনকে কিলঘুষি মারেন ব্যবসায়ীরা। পরে ব্যবসায়ীদের ধাওয়ায় অভিযানে অংশ নেওয়া ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ ও পৌরসভার কর্মকর্তা–কর্মচারীরা সেখান থেকে দ্রুত সরে যান।
পৌরসভার সমাজ উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা উচ্ছেদ অভিযানের আগে মাইকিং করেছি। সরাসরি গিয়ে প্রত্যেককে বলে আসা হয়েছে। নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এসবের পরও তাঁরা হামলা করেছেন। অভিযানে বাধা দিয়েছেন। এতে পৌরসভার চারজন কর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ সদস্যরা মার খেয়েছেন। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল আহাদ বলেছেন, কোনো পুলিশ সদস্য আহত হননি। ফল ব্যবসায়ীরা উত্তেজিত হওয়ার পর অভিযানে থাকা সবাই সেখান থেকে দ্রুত সরে আসেন।
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জ পৌরসভার প্রশাসক ও সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যেহেতু শহরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি, সেটা চলবে। আজ (বুধবার) অভিযানে যাঁরা বাধা দিয়েছেন, হামলা করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাল (বৃহস্পতিবার) আবার অভিযান হবে। এতে সব বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন।’