সকাল সাড়ে আটটা। ঝলমলে রোদ চারপাশে। এর মধ্যেই খোলা আকাশের নিচে ব্যাগের ওপর মাথা রেখে ঘুমাচ্ছিলেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিএনপিকর্মী হাবিবুর রহমান (৫০)। ঘুম থেকে উঠে তাঁর পাশে বসে আছেন একই এলাকা থেকে আসা শংকর কুমার রায়। মাঠের মধ্যে গোল হয়ে বসে হোটেল থেকে আনা পরোটা-সবজি খেতে বসেছেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার একটি দল। ভোরে বগুড়া থেকে আসা একদল কর্মী-সমর্থক ত্রিপল পেতে শুয়ে আছেন। ৮-১০টি শামিয়ানার মধ্যে গুটিসুটি হয়ে আছেন কিছু মানুষ। এটি রাজশাহী নগরের পাঠানপাড়া ঈদগাহ মাঠের আজ বৃহস্পতিবার সকালের দৃশ্য।
এসব মানুষ বিএনপির আগামী শনিবারের রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন। আজ থেকে বিভাগের আট জেলায় বাস ধর্মঘটের কারণে তাঁরা আগেই সমাবেশে চলে এসেছেন। সমাবেশস্থলে থাকার অনুমতি না পাওয়ায় ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছেন তাঁরা।
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা থেকে রাতেই দুই পিকআপ কর্মী-সমর্থক নিয়ে এসেছেন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান। চালের বস্তা মাথার নিচে দিয়ে ঘুমিয়েছেন তাঁরা। তার পশ্চিম পাশে কড়ই গাছের নিচে এক সারি মানুষ তখনো ঘুমিয়ে ছিলেন। গাছের গায়ে লাগানো একটি পোস্টারে লেখা ‘নাটোর জেলা’।
গুরুদাসপুর থেকে আসা শংকর কুমার রায় বলেন, রাত ১১টায় তাঁরা মাইক্রোবাসে করে এখানে এসে পৌঁছেছেন। সারা রাত এখানে খোলা আকাশের নিচে ঘুমিয়েছিলেন। ঠান্ডা আর মশার কামড়ে ঠিকমতো ঘুমোতে পারেননি।
বগুড়া থেকে প্রায় ৫০০ নেতা-কর্মী ভোর পাঁচটার দিকে এসে ঈদগাহ মাঠে পৌঁছেছেন। তাঁরা এসে ত্রিপল পেতে শুয়ে পড়েছেন। সকাল নয়টার দিকেও তাঁদের বেশির ভাগ শুয়ে ছিলেন। পাশেই একটি ভ্যান থেকে তাঁদের জন্য খিচুড়ি বিতরণ করা হচ্ছিল।
মাঠের দক্ষিণ পাশে একটি ছোট্ট শামিয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে খিচুড়ি খাচ্ছেন একদল মানুষ। তাঁরা পাবনার বেড়া উপজেলা হাটুরিয়া নাকালিয়া ইউনিয়ন শাখার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী। মাঠের মধ্যেই জায়গায় জায়গায় নতুন করে চুলা তৈরি করে রান্না শুরুর প্রস্তুতি চলছে।