স্থানীয়দের আলটিমেটামে হল ছেড়ে যাচ্ছেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বিকেলে
স্থানীয়দের আলটিমেটামে হল ছেড়ে যাচ্ছেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বিকেলে

‘স্থানীয়দের আলটিমেটামে’ হল ছাড়লেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া আলটিমেটামে ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে হল ছাড়ার কথা জানিয়েছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার বিকেল চারটা থেকে হল ত্যাগ করতে শুরু করেন তাঁরা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, হলে অবস্থানরত ব্যক্তিরা ছাত্রলীগ কর্মী ছিলেন। তবে হলের শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাঁরা সবাই সাধারণ শিক্ষার্থী। তাঁদের হল ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থী, নিরাপত্তাকর্মী ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে ক্যাম্পাসে ‘বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা পরিচয়ে’ কয়েক শ লোক শাহপরান হলের সামনে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আসেন। মিছিল দেখে শিক্ষার্থীরা হলের ভেতরে অবস্থান নেন। এ সময় স্থানীয়দের ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগবিরোধী স্লোগান দিতে দেখা যায়। এখনো হলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন, এমন অভিযোগ এনে সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে আবাসিক হল ছাড়ার আলটিমেটাম দেন তাঁরা। পরবর্তীকালে শিক্ষার্থীরা নিজেদের নিরাপত্তা শঙ্কায় হল ত্যাগ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন শিক্ষার্থী প্রথম আলোকে বলেন, গত ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো ছাত্রলীগমুক্ত করা হয়েছে। এরপর যাঁরা হলে অবস্থান করেছেন, তাঁরা সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে অবস্থান করেছেন। এরপরও ‘ছাত্রলীগের দালাল’ আখ্যা দিয়ে হল ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া সত্যিই হতাশাজনক।

সিলেট সিটি করপোরেশনের ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রিয়াজ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কাছে খবর আসে যে স্থানীয় জনতা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে এখনো ছাত্রলীগের দোসর আছে, এমন অভিযোগ এনে হল ত্যাগের দাবি জানিয়ে আবাসিক হলের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় সিটি করপোরেশনের আওতায় তাই আমি যাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, ‘আমরা বেলা ১১টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের সমস্যা সমাধানে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরে হঠাৎ স্থানীয়রা ক্যাম্পাসে ঢুকলে আমরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছি। প্রতিরোধ করতে না পারায় শিক্ষার্থীদের জানালে তারা হলে আসেন এবং স্থানীয়দের চাপের মুখে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত দেন।’

হল ছাড়ার বিষয়টি মর্মাহত করেছে উল্লেখ করে আরেক সমন্বয়ক দেলওয়ার হোসেন বলেন, যাঁরা হল ছেড়েছেন, তাঁদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথি ভবন ও আশপাশের পরিচিত মেসে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীরা হল ছাড়ার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক মো. সাজেদুল করীম। তিনি বলেন, ‘আমি আবাসিক হলে গেলে শিক্ষার্থীরা দুটি দাবি তুলে ধরে। শিক্ষার্থীদের দাবি, তারা যেন নিরাপদে বের হতে পারে এবং যাদের জিনিসপত্র এখনো রয়েছে, সেসব যেন সুরক্ষিত থাকে। আমরা সমন্বয়ক এবং সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের এ ব্যাপারে জানিয়েছি।’