গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে ঈদ উপলক্ষে বন্দীদের দেওয়া হয়েছে বিশেষ খাবার। দরিদ্র বন্দীদের দেওয়া হয়েছে শাড়ি, লুঙ্গি। এ ছাড়া ডে-কেয়ার সেন্টারের শিশুদের বিশেষ খাবারের পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে নতুন জামা। কারাগারগুলোতে নিরাপত্তা বজায় রেখে বন্দীদের জন্য আলাদা আলাদাভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, কারাগারে ঈদের আনন্দ অন্য সবার মতো নয়। এখানে প্রিয়জনদের ছাড়াই কাটাতে হয় ঈদ। তারপরও নিয়মনীতি মেনে চেষ্টা করা হয় বন্দীদের কিছুটা হলেও আনন্দ দিতে।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে ঈদ উপলক্ষে বন্দীদের জন্য স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ ও বাড়ি থেকে আনা খাবার নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এ সময় কারাগারের প্রধান ফটকে দায়িত্বে থাকা কারারক্ষীরা স্বজনদের কারাগারে ঢোকার সময় ব্যাগ ও খাবার তল্লাশি করে ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, তাঁর কারাগারে ২ হাজার ৩০০ বন্দী আছেন। তাঁদের মধ্যে ১ হাজার ৩৬ জন মৃত্যুদণ্ডের, ৩ শতাধিক যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এখানে ঈদের আগের দিন বন্দীদের লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে। এ কারাগারের ভেতরে বন্দীদের জন্য ঈদের নামাজের ২০টি জামাত হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঈদের দিন বন্দীদের খাবারের তালিকায় সকালে ছিল পায়েস ও মুড়ি। দুপুরে মাংস, পোলাও, সালাদ, কোল্ড ড্রিংকস এবং রাতে সাদা ভাত, রুই মাছ ও মুড়িঘন্ট।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১–এর সুপার মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, তাঁর কারাগারে ১ হাজার ৩১৩ জন বন্দী আছেন। এ ছাড়া বন্দীর মধ্যে শতাধিক মৃত্যুদণ্ডের, অর্ধশতাধিক যাবজ্জীবনের আসামি। এই কারাগারে বন্দীদের জন্য ঈদের তিনটি জামাত হয়।
কারাগারে পার্ট-১-এ বন্দীদের ঈদের সকালে পায়েস ও মুড়ি; দুপুরে মাংস, পোলাও, সালাদ, পান-সুপারি ও কোল্ড ড্রিংকস দেওয়া হয়। আর রাতে ছিল সাদা ভাত, আলুর দম, রুই মাছ, মুড়িঘন্ট।
কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২-এর সুপার মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, তাঁর কারাগারে বন্দী আড়াই হাজারের বেশি। তাঁদের মধ্যে শতাধিক মৃত্যুদণ্ডের ও পাঁচ শতাধিক যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। এই কারাগারে বন্দীদের জন্য ঈদের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। কারাগারের হলরুমে বন্দীদের বিনোদনের জন্য চারটি নতুন টেলিভিশন দেওয়া হয়েছে।
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারের ভারপ্রাপ্ত জেল সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, এখানে ৪৮৪ বন্দী আছেন। এ ছাড়া এই কারাগারের ডে-কেয়ার সেন্টারে বন্দীদের সঙ্গে আসা ৫২টি শিশু আছে। ফাঁসির আসামি ৩৩ জন ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ৪০ জন। শিশুদের অন্য বিশেষ খাবারের পাশাপাশি নতুন জামা এবং চকলেট ও চিপস দেওয়া হয়েছে। এখানে এবার নারীদের জন্য একটি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মহিলা কারাগারে খাবারের তালিকায় ছিল সকালে পায়েস ও মুড়ি; দুপুরে মাংস, পোলাও, কোল্ড ড্রিংকস, পান-সুপারি, সালাদ ও মিষ্টি এবং রাতে সাদা ভাত, আলুর দম, মুড়িঘন্ট ও রুই মাছ।