রাজশাহীতে দুই হাতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে হওয়া মামলায় যুবলীগ নেতা জহিরুল হক ওরফে রুবেলের (৪১) পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১–এর বিচারক মো. ফয়সল তারেক রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ জহিরুলকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিল।
এর আগে গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে জহিরুলকে কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে আটক করে র্যাবের একটি দল। পরে গতকাল শনিবার গভীর রাতে তাঁকে রাজশাহীতে আনা হয়। আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাঁকে নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার পুলিশ আদালতে তোলে।
নগরের বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, জহিরুলকে র্যাব গ্রেপ্তার করে গতকাল গভীর রাতে কুমিল্লা থেকে রাজশাহীতে আনে। আজ পুলিশ তাঁকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে। রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী ও রাজশাহী মহানগর ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান হত্যা মামলায় জহিরুল হক রুবেলের পাঁচ দিনের জহিরুলের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে আদালত পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাঁকে বোয়ালিয়া থানায় করা চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট দুপুরে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতা নগরের তালাইমারী মোড় থেকে মিছিল নিয়ে নগরের সাহেববাজারের দিকে যেতে থাকেন। এই খবরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগসহ অন্যরা রাইফেল, পিস্তল, রিভলবার, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র রামদা, চাপাতি, হাঁসুয়া নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের হত্যা উদ্দেশ্যে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এ সময় যুবলীগ নেতা জহিরুলসহ অন্যরা সাহেববাজার থেকে আলুপট্টি মোড়ের দিকে আসেন। আলুপট্টি মোড়ে তাঁরা ছাত্র-জনতার ওপর এলোপাতাড়ি গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকেন।
এ ঘটনায় ৭০ থেকে ৮০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাকিব আনজুম ঘটনাস্থলেই মারা যান। গুলিবিদ্ধ হওয়া রাজশাহী কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলী রায়হান ৮ আগস্ট রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবার মামলা করে। এ দুটি মামলার পাশাপাশি আরও দুটিসহ মোট চারটি মামলায় আসামি করা হয়েছে জহিরুলকে।