যশোরে এক রাতে বিএনপির শীর্ষ চার নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে কেউ হতাহত না হলেও বাড়ির জানালা, সিঁড়িঘরের কাঁচসহ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাত থেকে আজ শনিবার ভোর পর্যন্ত হামলার ঘটনার ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে ওই চার নেতা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে আছেন।
বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে প্রথমে যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগমের ঘোপ এলাকার বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় হামলাকারী ব্যক্তিরা বাড়ির বাইরে থেকে ইট ছুড়তে থাকে। এতে দুই বাড়ির জানালার কাঁচ ও গাছের টব ভেঙে যায়। নার্গিস বেগমের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম বিএনপির খুলনা বিভাগীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক।
এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে দুর্বৃত্তরা উপশহরে গিয়ে বিএনপির জেলা কমিটির সদস্যসচিব সৈয়দ সাবেরুল হক ও সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান এবং ধর্মতলা এলাকায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেনের বাড়িতে হামলা চালায়।
সৈয়দ সাবেরুল হক বলেন, হামলাকারী ব্যক্তিরা ২০ থেকে ৩০টি মোটরসাইকেল ও ৩টি প্রাইভেট কার নিয়ে এসেছিল। পরে হামলাকারী ব্যক্তিরা বৃষ্টির মতো খালি কাঁচের বোতল ছুড়তে শুরু করে। এতে তাঁর বাড়ির জানালা ও সিঁড়িঘরের কাঁচ ভেঙ্গে যায়। এ ঘটনায় বাড়ির লোকজন হতাহত না হলেও নারী ও শিশুদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপির খুলনা বিভাগীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকার দলের লোকজন “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে মধ্যরাতে বিএনপির চার নেতার বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে পুলিশ সুপারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল ঘুরে গেছে। বিএনপির কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা দেখে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। বিএনপির নেতাদের দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে রাখতে বাড়িঘরে হামলা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপি কর্মসূচি থেকে পিছু হটবে না। আজও আমরা কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হামলা করলে “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে কেন হামলা করব! বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিজেদের মধ্যে গোলমাল করে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপাচ্ছে। আগস্ট মাস এলেই বিএনপি পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে।’
যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুপম কুমার সরকার বলেন, বিএনপির নেতারা জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল করেছিলেন। তথ্য পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেউ অভিযোগ না দিলে পুলিশ কি কোনো ব্যবস্থা নেবে না—এমন প্রশ্নের জবাবে রুপম কুমার সরকার বলেন, ‘বিচারপ্রার্থী না থাকলে কীভাবে ব্যবস্থা নিব? তবে তদন্ত চলছে।’