গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বাসিন্দা আফজাল হোসেন ঢাকার বনানীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে এসে অফিস করেন তিনি। আজ সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন সড়কে কোনো গণপরিবহন চলছে না। নিরুপায় হয়ে হাঁটা শুরু করেন। আফজাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় বের হইয়া মনে হইতাছে দেশে হরতাল চলতাছে। দেখি রিকশা বা অটো দিয়ে কত দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়, তা না হলে হয়ত হেঁটেই যেতে হবে।’
শুধু আফজাল হোসেন নন, আজ শনিবার ভোর থেকে শত শত মানুষ হেঁটে তাঁদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন মোড়ে ও চেকপোস্টে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁদের।
ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ ভোর থেকেই গাজীপুরে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন কমে গেছে। কিছু পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস একেবারেই দেখা যায়নি। মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা চলাচলেও বেশ কড়াকড়ি চলছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্টে এসব গাড়িতে চলছে তল্লাশি। গাড়ি সংকটে পড়ে পোশাক শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীরা পড়েছে ভোগান্তিতে।
গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় থেমে থাকা একটি বাসের চালক আসাদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে যাত্রীসহ শেরপুর থেকে বাস নিয়ে আসেন তিনি। পুরো সড়কে কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি। কিন্তু ভোরে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়।
গাজীপুর সদর উপজেলার মণিপুর এলাকার বাসিন্দা হাজেরা খাতুন তাঁর ডায়রিয়া আক্রান্ত আট মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে মহাখালী ডায়রিয়া হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। অতি কষ্টে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত পৌঁছালেও বাস বা অন্য কোনো গাড়ি না পাওয়ায় তিনি হাসপাতালে যেতে পারছিলেন না। অনেকক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশকে বুঝিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন তিনি।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (ট্রাফিক বিভাগ) সহকারী কমিশনার অশোক কুমার বলেন, সড়ক মহাসড়কে যানবাহন কম চলছে। পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশি করলেও যানবাহন চলাচলে কোনো বাধা দিচ্ছে না।
গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার বলেন, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে গাড়ি বন্ধ রাখার বিষয়ে তাঁরা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তবে রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় হয়তো বাস কম চলছে।