বাংলাদেশে পাট পণ্যের উৎপাদন ও বুনন থেকে শুরু করে জাহাজীকরণ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৪ কোটি মানুষ জড়িত। ২০২০ সালে পাটকল বন্ধ করে দেওয়ার ফলে অধিকাংশ মানুষই বেকার হয়ে পড়েছেন। পাটকল চালু হলে পাট খাতে সুদিন ফিরে আসবে। খুলনা অঞ্চলের ৯টিসহ সারা দেশের ২৫টি পাটকল পুনরায় সরকারিভাবে চালুর দাবি জানানো হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে ওই দাবি করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল খালিশপুর শিল্পাঞ্চল আঞ্চলিক শাখা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবু দাউদ দ্বীন মোহাম্মদ।
আহ্বায়ক বলেন, ২০২০ সালের ৩০ জুন বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রিত ২৫টি পাটকল বন্ধ করে দেয় আওয়ামী লীগ সরকার। এতে শ্রমিকেরা আবাসিক কলোনি ছেড়ে যাঁর যাঁর গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হন। বন্ধ হয়ে যায় শ্রমিকদের সন্তানদের লেখাপড়া। সরকার তিন মাসের মধ্যে পুনরায় পাটকল চালুর ঘোষণা দিলে আজও তা বাস্তবায়ন হয়নি। অন্যদিকে সব শ্রমিককে এখনো তাঁদের পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। এতে ওই শ্রমিকেরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আহ্বায়ক বলেন, পাটকল বন্ধ করে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হলেও বিজেএমসির কর্মকর্তারা এখনো বহাল তবিয়তেই আছেন। তাঁরা ঠিকই কোনো কাজ ছাড়াই প্রতি মাসে বেতন পাচ্ছেন। অন্যদিকে মিল চালু না থাকায় মিলের যন্ত্রপাতি মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকার মিলগুলো অন্য প্রতিষ্ঠানকে লিজ দিলেও ওই প্রতিষ্ঠানগুলো পাটকল চালু না করে সেখানে অন্য ব্যবসা করার পাঁয়তারা করছে।
শ্রমিকনেতারা দাবি করেন, বর্তমান অবস্থায় পাটকলগুলোর লোকসানের আশঙ্কা নেই। কারণ পাটকলে এখন কোনো স্থায়ী শ্রমিক নেই। পাটকলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও চাকরি হারানোর আতঙ্কে আছেন। এ কারণে পাটকলের পরিবেশ শান্ত, নিরাপদ ও উৎপাদন সহযোগী রয়েছে। এমন অবস্থায় পাটকল চালু করলে পাটকল এলাকায় আবার কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। উৎপাদন শুরু হলে পাটের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে, এতে পাটচাষিরা ন্যায্যমূল্য পাবেন। তাই সার্বিক দিক বিবেচনা করে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো পুনরায় চালু করার দাবি জানান তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল খালিশপুর শিল্পাঞ্চল শাখার সদস্যসচিব মো. আলমগীর তালুকদার, খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম (মনা), সদস্যসচিব শফিকুল আলম (তুহিন), শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আবুল কালাম প্রমুখ।