বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে কুড়িগ্রামে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত আশিকুর রহমান আশিক (২৪) নামের এক শিক্ষার্থী মারা গেছেন। আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত আশিকের ছোট ভাই আতিকুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আশিক কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামের কৃষক চাঁদ মিয়ার ছেলে। উলিপুরের পাঁচপীর ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। কয়েক মাস আগে তিনি বিয়ে করেছিলেন।
গত ৪ আগস্ট কুড়িগ্রাম শহরের শাপলা চত্বরে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থী-জনতার সংঘর্ষের সময় মাথায় ঢিল লেগে আশিক আহত হন। আহত অবস্থায় আশিককে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গত ১৮ আগস্ট তাঁকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তাঁর মৃত্যু হয়।
আশিকের ছোট ভাই আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নই। সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে ৪ আগস্ট আমি ও ভাইয়া আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলাম। আওয়ামী লীগের লোকজনের ঢিল ও পিটুনিতে আমিও আহত হয়েছিলাম। ভাইয়া মাথায় আঘাত পেয়ে বাড়িতে ফিরেছিল। কিন্তু আঘাতের কারণে তার বমি শুরু হয়। জ্বর আসে। পরে রংপুর হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাঁচানো গেল না। আঘাতের কারণে তার মাথায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়েছিল বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।’
আতিকুর আরও বলেন, আশিকের মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে যান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কেরা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁর জানাজা শেষে লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হবে। সোমবার গ্রামে দাফন সম্পন্ন হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এর আগে কুড়িগ্রামের চারজন নিহত হন। তাঁরা সবাই ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে তাঁদের লাশ কুড়িগ্রামে নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে এনে দাফন করা হয়।