শিশু ধর্ষণ
শিশু ধর্ষণ

ধর্ষণের শিকার শিশুটি চোখ খুললেই মাকে জড়িয়ে ধরে অপলক চেয়ে থাকছে

নাটোরের গুরুদাসপুরে ছয় বছরের এক কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানকার একজন চিকিৎসক জানিয়েছেন, ধর্ষণের কারণে মেয়েটির গোপনাঙ্গ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পাশাপাশি স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।

গুরুদাসপুর পৌর এলাকায় গত শনিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে প্রতিবেশী গফুর মোল্লা (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে আসামি করে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। শনিবার দিবাগত গভীর রাতে গফুর মোল্লাকে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে আজ রোববার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন।

আজ সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ধর্ষণের শিকার মেয়েটিকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। অচেতন হয়ে বেডে ঘুমাচ্ছে মেয়েটি, আর মা শিশুটিকে জড়িয়ে ধরে রয়েছেন। মেয়েটির মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর থেকে মেয়েটির কান্নাকাটি থামছেই না। হাসপাতালে ভর্তির পর ভয়–আতঙ্কে জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। কোনো কথা বলছে না, ঠিকমতো খাচ্ছে না। চোখ খুলেই তাঁকে জড়িয়ে ধরে অপলক চেয়ে থাকছে। শিশুটির মা আক্ষেপ করে বলেন, এতটুকু এক শিশুর ওপর এমন পাশবিক নির্যাতন কোনো মানুষ করতে পারে! মেয়ের ওপর নির্যাতনকারীর শাস্তি দাবি করেন মা।

মেয়েটির বাবা জানান, ধর্ষণকারী এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। মামলা না করার জন্য তাঁকে আর্থিক প্রলোভন ও নানাভাবে চাপ, ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন। শিশুমেয়েটির কারণে ভয়ে পিছু হটেননি তিনি। কারণ তাঁর মেয়ের সঙ্গে যে অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে, তা ক্ষমা করা যায় না। ন্যায়বিচার পেতে শেষ পর্যন্ত লড়ে যাবেন বলে জানান ওই বাবা।

থানা–পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়ির পাশের গফুর মোল্লার লিচুবাগানে শনিবার দুপুরে খেলতে গিয়েছিল শিশুটি। সুযোগ বুঝে তাকে ধর্ষণ করেন গফুর মোল্লা। ঘটনার পর মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে কান্না শুরু করে। তার গোপনাঙ্গ থেকে রক্ত ঝরতে দেখে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মা। এ জন্য প্রতিবেশী গফুর মোল্লাকে দায়ী করে মেয়ে।

থানা হাজত থেকে আদালতে পাঠানোর সময় অভিযুক্ত গফুর মোল্লা নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেছেন। ঘটনাটিকে অমানবিক উল্লেখ করে গুরুদাসপুর থানার ওসি গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানকার একজন নারী চিকিৎসকের সহায়তায় শিশুটির গোপনাঙ্গ পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে ধর্ষণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন তিনি। তবে মেয়েটির সঙ্গে যেটা ঘটেছে, তা বর্ণনা করার মতো নয় বলে উল্লেখ করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।