কুয়াশার কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি বন্ধ রয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে
কুয়াশার কারণে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি বন্ধ রয়েছে। আজ শুক্রবার সকালে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ

কুয়াশার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি ও বাতাস, তিন দফা ফেরি বন্ধে যাত্রীদের ভোগান্তি

কুয়াশার কারণে টানা চার দিন রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি, লঞ্চসহ অন্যান্য নৌযান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে আবারও ফেরিসহ সব নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন পারাপার ব্যাহত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীসহ পরিবহনের চালকেরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুয়াশার কারণে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টা ৩০ মিনিট থেকে ফেরি বন্ধ হয়। প্রায় চার ঘণ্টা পর শুক্রবার সকাল সোয়া ছয়টার দিকে ফেরি ছাড়লেও মাঝনদীতে পৌঁছে কুয়াশার কবলে পড়ে। প্রায় ২০ মিনিট নোঙরে থাকার পর সাড়ে ছয়টার দিকে কুয়াশা কম দেখে ফেরিগুলো ঘাটে পৌঁছানোর পর আবার চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে পড়ায় সাড়ে সাতটার দিকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে কুয়াশা কমলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। তিন দফা ফেরি বন্ধ থাকায় যানবাহন পারাপার ব্যাহত হয়। গতকাল মধ্যরাত থেকে নদী অববাহিকায় কুয়াশার সঙ্গে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো শিশির পড়তে থাকে। এ ছাড়া বাতাস থাকায় তীব্র ঠান্ডায় আটকে থাকা যাত্রী ও যানবাহনের চালকদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

দৌলতদিয়ার ৩ নম্বর ঘাটে রো রো (বড়) ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর, এনায়েতপুরী, ৪ নম্বর ঘাটে ভাষাসৈনিক গোলাম মাওলা, ৭ নম্বর ঘাটে কেরামত আলী, ভাষাশহীদ বরকত, কে টাইপ (মাঝারি) ফেরি বাইগার এবং ইউটিলিটি (ছোট) ফেরি বনলতা নোঙরে থাকে। পাটুরিয়ার ৩ নম্বর ঘাটে ইউটিলিটি ফেরি কপোতী, কে টাইপ ফেরি গৌরী এবং ঢাকা নোঙরে ছিল। আগেভাগে সতর্ক থাকায় মাঝনদীতে কোনো ফেরি আটকা ছিল না।

দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার বাসিন্দা আলাউদ্দিন খান বলেন, টানা চার দিন প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে পরদিন সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ফেরি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ছেন নদী পারের অপেক্ষায় থাকা যাত্রীরা। বিশেষ করে পরিবহনের নারী ও শিশু যাত্রীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। প্রকৃতির কাজ সারতে বাধ্য হয়ে ঘাট এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ছুটতে হচ্ছে অনেককে। আবার গভীর রাতে পরিবহন থেকে বাইরে থাকলে ছিনতাইসহ মালামাল চুরিও হচ্ছে বলে জানা যায়।

রাজবাড়ীর হৃদয় সূত্রধর ঢাকার রামপুরায় জরুরি কাজে যাচ্ছিলেন। ভোরে রওনা হয়ে কুয়াশায় ফেরিসহ লঞ্চ বন্ধ থাকায় ঘাটে অন্য যাত্রীদের মতো অপেক্ষা করতে থাকেন।
দৌলতদিয়ার ৪ নম্বর ফেরিঘাটে থাকা অবস্থায় হৃদয় বলেন, সকাল ১০টায় রামপুরায় পৌঁছানোর কথা। আগেভাগে রওনা করে কোনো লাভ হলো না। মধ্যরাত থেকে ফেরি বন্ধ থাকায় নদী পাড়ি দিতে পারছেন না।

দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটের দায়িত্বপ্রাপ্ত আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির ব্যবস্থাপক নুরুল আনোয়ার বলেন, দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে লঞ্চ চালানো বন্ধ রাখছেন। এ সময় যাত্রীদের লঞ্চের পরিবর্তে ফেরিতে নদী পাড়ি দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু কুয়াশায় ফেরিও বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) নাসির মোহাম্মদ চৌধুরী জানান, টানা চার দিন মধ্যরাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত কুয়াশায় ফেরি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকছে। এই মৌসুমে আগেও তিন দিন কুয়াশায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হয়।