প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

দুই প্রসূতির কিডনি বিকল, চলছে ডায়ালাইসিস

চট্টগ্রাম নগরে অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্মদানের সময় জীবন ঝুঁকিতে পড়া দুই প্রসূতি এখন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুজনেরই উভয় কিডনি বিকল হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

তাঁদের মধ্যে সুমাইয়া তারিনের (১৯) বহদ্দারহাট সমশেরপাড়ার ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬ মার্চ অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তিনি একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। অপরজন জান্নাতুল ফেরদৌসের (২৫) পাঁচলাইশের ডেল্টা হসপিটালে ২১ মার্চ অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তিনি একটি পুত্রসন্তান প্রসব করেন। সন্তান প্রসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দুজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাঁদের শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়।

এরপর তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি পার্কভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) প্রথমে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাঁদের কিডনিতে জটিলতা ধরা পড়ে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, দুজনেরই কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে। সেখানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক রফিকুল হাসানের তত্ত্বাবধানে তাঁদের ডায়ালাইসিস চলছে। সপ্তাহে তিনবার ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হচ্ছে।

জানতে চাইলে রফিকুল হাসান আজ শুক্রবার বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের পর দুজন রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। বাইরের হাসপাতালে সিজারিয়ানের পর পার্কভিউতে আসেন। এখানে তাঁদের কিডনি বিকল অবস্থায় পাওয়া যায়। এখন ডায়ালাইসিস চলছে। আশা করি, আস্তে আস্তে কিডনি কাজ করবে। তাঁদের বেশ কিছুদিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দিতে হবে।’

সুমাইয়াকে ১৮ মার্চ এবং জান্নাতুল ফেরদৌসকে ২৩ মার্চ পার্কভিউ হাসপাতালে সংকটাপন্ন হিসেবে ভর্তি করা হয়। সুমাইয়া তারিনের স্বামী আজিম উদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আমার স্ত্রীকে শেষ করে দিয়েছে। তারা ছাড়পত্র দেওয়ার সময় কোনো কাগজপত্রও দেয়নি। কে অস্ত্রোপচার করেছে তা–ও লিখে দেয়নি। এখন সপ্তাহে তিন দিন ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। জানি না কবে শেষ হবে এই দুর্দশা।’

উল্লেখ্য, সন্তান জন্মদানে অস্ত্রোপচারের পর জটিলতায় গত দেড় সপ্তাহে চট্টগ্রামে আট প্রসূতির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চারজন, আগ্রাবাদ মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে তিনজন এবং সিটি করপোরেশন মেমন মাতৃসদনে একজনের মৃত্যু হয়। সিভিল সার্জন কার্যালয় ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা এই মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে কাজ করে যাচ্ছেন।