শিশুটির দিনের বেশির ভাগ সময় কাটত বাড়ির পাশেই নানির বাড়িতে। সেখান থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে নিজের বাড়িতে ফেরার সময় শিশুটির প্রাণ কেড়ে নিল বেপরোয়া গতির একটি ড্রামট্রাক। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শেরুয়া বটতলা থেকে ভবানীপুরগামী সড়কের আন্দিকুমড়া পূর্বপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুটির নাম মায়া (৪)। সে কানাইকান্দর পূর্বপাড়া গ্রামের মেরাজুল ইসলামের মেয়ে। শিশুটির নানি কল্পনা বেগম বলেন, মায়াদের বাড়ির পাশেই তাঁদের বাড়ি। বাড়ির কাছে আন্দিকুমড়ার সড়কের পশ্চিম পাশে তাঁর একটি দোকান রয়েছে। দোকান থেকে সড়কের পাশ দিয়ে মায়া নিজ বাড়িতে মায়ের কাছে যাচ্ছিল। পথে মাটিবাহী একটি ড্রামট্রাক তাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর নাতনি মারা যায়।
দুজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ড্রামট্রাকটি ছিল মাটিবোঝাই। শিশুটিকে চাপা দেওয়ার পর চালক দ্রুত ট্রাকটি নিয়ে পালিয়ে যান। ট্রাকটির মালিক আবদুল খালেক বলে দাবি তাঁদের।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই এলাকার পাকা সড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন দিনে-রাতে কয়েক শ মাটিবাহী ড্রামট্রাক বেপরোয়া আসা-যাওয়া করে। বেপরোয়া গতির কারণে এসব ট্রাককে ওই সড়ক এড়িয়ে চলতে একাধিকবার বলা হয়েছে। কিন্তু ট্রাকচালকেরা কথা শোনেননি। সমস্যাটা নিয়ে পুলিশ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনকে অবগত করেও কোনো উপকার হয়নি। এ কারণে স্থানীয় জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। আজ ড্রামট্রাকের চাপায় শিশুর মৃত্যুর পর ওই এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা ওই সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানান।
স্থানীয় পাঁচ নারী জানান, আন্দিকুমড়া পূর্বপাড়া এলাকায় পাকা সড়কের ওপর দিয়ে প্রতিদিন গ্রামের শিশুরা বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে। বেপরোয়া গতিতে মাটিবাহী ড্রামট্রাক চলাচল বন্ধ না হলে দুর্ঘটনায় আরও শিশুর প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রামের প্রতিটি পরিবার দুশ্চিন্তায় আছে।
এ বিষয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার বলেন, দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, সড়কে ওই শিশুর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।