মাদারীপুরের শিবচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে হিরু মাতুব্বর (৩৫) নামের এক ব্যক্তি নিহতের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত দুটার দিকে শিবচর থানায় তাঁর বাবা এসকেন্দার মাতুব্বর বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় ৬৫ জনকে এজাহারভুক্ত ও ৬০ থেকে ৭০ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় সুমন নামের এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি দত্তপাড়া ইউনিয়নের সাইলা এলাকার বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দত্তপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির নেতা মালেক মোল্লা ও টুকু ফরাজির মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। গত রোববার রাতে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এর জেরে গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়ার পর খাড়াকান্দি এলাকায় আবার সংঘর্ষে জড়ান তাঁরা। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ছয়জন আহত হন। ওই সময় মালেক মোল্লার অনুসারী হিসেবে পরিচিত হিরু আর্য্যদত্তপাড়া এলাকায় গেলে তাঁকে কুপিয়ে জখম করেন টুকু ফরাজি ও তাঁর সমর্থক জিয়াউল মাতুব্বরের লোকজন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হিরুকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
হিরুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ভয়ে পালিয়ে যান প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সুযোগে মালেক মোল্লার লোকজন প্রতিপক্ষ টুকু ফরাজির কয়েকজন সমর্থকের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই সময় কয়েকটি বসতঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে শিবচর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকাটিতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মামলার বাদী ও হিরুর বাবা এসকেন্দার মাতুব্বর বলেন, ‘গ্রামে দলাদলির কারণে আমার পোলাডার জীবন গেছে। ফরাজী আর মাতুব্বররা আমার পোলারে মাইরা ফালাইছে। যারা আমার পোলারে খুন করছে, ওদের বিচার চাই। ওদের যেন ফাঁসি হয়।’
বর্তমানে ওই এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকতার হোসেন। তিনি জানান, বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। ময়নাতদন্ত শেষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে হিরুর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।