বহিষ্কৃত হয়ে নির্বাচন থেকে ‘সরে দাঁড়ানো’ বিএনপি নেতা আবার প্রচারণায়

দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় গাজীপুর সদর থানা বিএনপির সভাপতি হাসান আজমল ভূঁইয়াকে বহিষ্কার করে বিএনপি। গত বৃহস্পতিবার তোলা ছবি
ছবি: সংগৃহীত

দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছিলেন সদর থানা বিএনপির সভাপতি হাসান আজমল ভূঁইয়া। এ জন্য গত মঙ্গলবার তিনসহ ২৯ নেতাকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে বিএনপি। দলের এমন কঠোর সিদ্ধান্তের পর গত শুক্রবার তিনি ‘ক্ষমা প্রার্থনা’ করে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। তবে এর এক দিন পর তিনি আবার নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। শেষ মুহূর্তে ভোটের প্রচারণা আরও বেগবান করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে হাসান আজমল ভূঁইয়ার মুঠোফোনে গতকাল সোমবার এই প্রতিবেদক ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে আমি আর কথা বলতে চাই না।’ এই বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি।

বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকারের অধীন বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না—এমন সিদ্ধান্তে অনড় দলটি। দলের এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গাজীপুর সিটি করপোরেশনে ৩০ নেতা বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গত মঙ্গলবার তাঁদের মধ্যে ২৯ জনকে দল থেকে আজীবন বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বহিষ্কৃত নেতাদের একজন হাসান আজমল ভূঁইয়া।

বহিষ্কারের পর গত শুক্রবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন হাসান আজমল ভূঁইয়া। সে সময় সাংবাদিকদের দেওয়া লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেছিলেন, দলীয় শৃঙ্খলার প্রতি অনুগত থেকে ১৯৮৪ সাল থেকে ছাত্রদল, যুবদল করে ধারাবাহিকভাবে মূল দল বিএনপিতে দলীয় এবং সাংগঠনিক দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তিনি একাধিকবার কাউন্সিলর হয়েছেন। স্থানীয় নির্বাচনে দলের অনেকে অংশ নেওয়ায় তিনি এবার প্রার্থী হন। দলের যাঁরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন, তাঁদের ব্যাপারে দলীয় হাইকমান্ড এতটা কঠিন মনোভাব পোষণ করবেন—এটা তিনি বুঝতে পারেননি। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াটা ভুল হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তবে এ ঘোষণার এক দিন পর থেকে হাসান আজমল ভূঁইয়া আবার প্রচার-প্রচারণায় নামেন। গতকাল সোমবার বিকেলে গাজীপুর শহরের পাশেই টাঙ্কিরপাড়, জোড়পুকুরসহ আশপাশের এলাকায় তাঁর পক্ষে মাইকিং চলতে দেখা যায়।

গাজীপুরের দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকার এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু আদতে তিনি প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বোঝাতে চাইছেন, তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন, যাতে তিনি পরবর্তী সময়ে আবার দলে ফিরতে পারেন।

এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মাজহারুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাসান আজমল ভূঁইয়াকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এখন হয়তো নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার কথা বলে দলের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছেন তিনি। তবে আমাদের কাছে খবর আছে, তিনি নির্বাচন করছেন।’