সিলেটের গোলাপগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদকে প্রধান আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে।
৪ আগস্ট গুলিতে নিহত গোলাপগঞ্জ পৌর এলাকার উত্তর ঘোষগাঁওয়ের বাসিন্দা গৌছ উদ্দিনের ভাতিজা রেজাউল করিম বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলাটি করেন। আজ রোববার মামলার বিষয়টি জানাজানি হয়।
সিলেটের গোলাপগঞ্জে ৪ আগস্ট পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে ছাত্র-জনতার সংঘর্ষে ৭ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় এই প্রথম কোনো মামলা হলো।
সিলেট জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মো. সম্রাট তালুকদার মামলা হওয়ার তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ব্যাপারে কথা বলতে মামলার বাদী রেজাউল করিমের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এ ছাড়া গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মীর মোহাম্মদ আব্দুন নাসেরের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি।
মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ছাড়াও গোলাপগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আমিনুল ইসলাম, কাউন্সিলর রুহিন আহমদ খান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মান্না আহমদসহ ১৩৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী দাবি করেছেন, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগায় গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জামেল আহমদ চৌধুরীর মাধ্যমে তিনি লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মসূচির অংশ হিসেবে গোলাপগঞ্জ উপজেলা ও পৌর এলাকায় ৪ আগস্ট দুপুরে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মী, পুলিশ-বিজিবি সদস্যরা আন্দোলনে গুলিবর্ষণ করেন। স্থানীয় জনতা ছাত্রদের রক্ষার্থে এগিয়ে এলে গৌছ উদ্দিনসহ অনেকেই গুলিবিদ্ধ হন। এতে গৌছ উদ্দিন ঘটনাস্থলেই মারা যান।
পরবর্তী সময়ে দেশের পরিবেশ অস্থিতিশীল থাকায় গৌছ উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দুই দিন পর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ, ছবি সংগ্রহ করে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।