চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজধানী ঢাকাসহ আটটি রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের পর এই জেলা থেকে এসব রুটে যাত্রীবাহী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। পরিবহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আগামীকাল শনিবার রাতের আগে বাস ছাড়ার তেমন সম্ভাবনা নেই।
রুটগুলো হচ্ছে—চুয়াডাঙ্গা থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রাজবাড়ী, গোপালগঞ্জ, বরিশাল ও পটুয়াখালী। এসব রুটে প্রতিদিন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টা থেকে পরের দিন রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১০টি পরিবহনের শতাধিক ট্রিপ বাস ফরিদপুর জেলার ওপর দিয়ে চলাচল করে।
কাল ফরিদপুরের কোমরপুর আবদুল আজিজ ইনস্টিটিউশন মাঠে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে আজ শুক্রবার সকাল থেকে ফরিদপুরে শুরু হয়েছে ৩৮ ঘণ্টার বাস ধর্মঘট। মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধের দাবিতে ধর্মঘট ডাকার কথা বলছে জেলা বাস মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। যদিও বিএনপি বলছে, গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের সভাপতি মো. সালাউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ফরিদপুরে পরিবহন ধর্মঘট আহ্বান করায় শ্রমিকেরা গাড়ি চালাতে আগ্রহী নন। পরিবহনের নিরাপত্তা ও বাড়তি ঝামেলা এড়াতে মালিকেরা বাস ছাড়ছেন না।
যদিও চুয়াডাঙ্গা থেকে ফরিদপুরের গণসমাবেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন বিএনপির নেতারা। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে বিএনপির ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা খুলনার গণসমাবেশে অংশ নিয়েছিলেন। ফরিদপুরের সমাবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে যোগদানের বিষয়ে কেন্দ্রের কোনো নির্দেশনা নেই। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে কেউ যেতে পারেন।
এদিকে যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এসব রুটে চলাচলকারী সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। আজ সকাল থেকে চুয়াডাঙ্গা বিভিন্ন কাউন্টারগুলোয় গিয়ে যাত্রীবাহী কোনো বাসের দেখা মেলেনি। পরিবহনের ব্যবস্থাপক ও কাউন্টার মাস্টারদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়।
চুয়াডাঙ্গা থেকে সবচেয়ে বেশি ট্রিপে (৫৬ ট্রিপ) বাস চলাচল করে রয়েল এক্সপ্রেস পরিবহনের। এই পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আবুল বাশার বলেন, দাপ্তরিকভাবে কেউ বাস বন্ধ করতে বলেননি। তবে ফরিদপুরে স্থানীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিকেরা ধর্মঘটের ডাক দেওয়ায় বাস বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ধর্মঘট প্রত্যাহারের না হওয়া পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশনে দাঁড়িয়ে কথা হয় সাইফুল ইসলাম নামের এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, চিকিৎসার প্রয়োজনে জরুরিভাবে ঢাকায় যেতে হবে। কিন্তু হঠাৎ বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন। এই যাত্রী বলেন, ‘ট্রেনে ঢাকায় যাব সেখানেও আসন ফাঁকা নেই। অগত্যা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার পথ ট্রেনের ভেতরে দাঁড়িয়ে যেতে হবে।’