প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগ

‘শীতে কম্পল পেয়ে খুপ উপকার হলো’

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২০০ শীতার্তের হাতে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সুন্দরবনঘেঁষা দাঁতনিখালি গ্রামের প্রথম আলো দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে
ছবি: প্রথম আলো

‘মাটির ঘরে বেড়ার ফাঁক দে সন্ধ্যার পরেত্তে যেন বরফ পড়ে। কনকনে ঠান্ডা বাতাসে কষ্ট পাতিলাম। একখানা কম্বল নয়েছে তা ফুটো হয়ে গেছে। বাঁচি আছি যে কেমন করে তা বলতি পাত্তিনে। কম্পল পেয়ে খুপ উপকার হলো।’

আজ শুক্রবার প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল পেয়ে আনন্দে এসব কথা বলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সুন্দরবনঘেঁষা দাঁতিনাখালী গ্রামের ফুলমতি মুন্ডা। বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই ফুলমতি কাঁচা ঘরে একাই থাকেন।

সাতক্ষীরা শহর থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার সিংহড়তলী, চুনকুড়ি, হরিনগর, জেলেপাড়া, মথুরাপুর, ঋষিপাড়া, দাঁতিনাখালী, বুড়িগোয়ালিনীসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে বাঘবিধবা, মুন্ডা, হরিজনসহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ২০০ শীতার্ত মানুষের তালিকা তৈরি করেন প্রথম আলো বন্ধুসভা সাতক্ষীরার বন্ধুরা।

তালিকা অনুযায়ী আজ শুক্রবার সিংহড়তলী গ্রামে প্রথম আলোর তৈরি করা ‘প্রথম আলো দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্র’ চত্বরে ১৪০ জনের হাতে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। পরে মুন্সিগঞ্জের টাইগার পয়েন্টে দাঁতিনাখালী, বুড়িগোয়ালিনী, নীলডুমুর, দুর্গাবাটি, পুড়াকাটলা ও মাদিয়া গ্রামের আরও ৬০ জনকে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২০০ মানুষের হাতে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মুন্সিগঞ্জের টাইগার পয়েন্টে

মুন্সিগঞ্জের জেলেপাড়ার বাঘবিধবা সুন্দরী বালা। প্রায় ৩০ বছর আগে সুন্দরবনে মধু সংগ্রহ করতে গিয়ে বাঘের আক্রমণে তাঁর স্বামী প্রাণ হারান। স্বামীর মৃত্যুর পর নদীতে মাছ ধরে তাঁর সংসার চলত। এখন অসুস্থ শরীর নিয়ে কাজ করতে পারেন না। প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বন্ধুসভার সদস্যরা কম্বল তুলে দিতেই তাঁর যেন আনন্দ ধরে না। কয়েকবার সালাম দিলেন। প্রথম আলোকেও ধন্যবাদ দিতে ভুললেন না। সুন্দরী বালা বলেন, কম্বল পেয়ে শীত থেকে কিছুদিন বাঁচতে পারবেন।

৮০ বছরের বৃদ্ধা প্রভাষ মুন্ডা কম্বল পেয়ে বললেন, ‘কম্পল পেয়ে খুব উপকার হয়েছে। সারা নাত শীতে কষ্টে থাকতে হয়। একখানা ছেঁড়া কাঁথায় শীত মানায় না। কম্পল পেয়ে ভালো নাগছে।’

কম্বল বিতরণের সময় প্রথম আলো বন্ধুসভা সাতক্ষীরার সভাপতি কর্ণ বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানুর রহমান, পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক মৌটুসী চ্যাটার্জী, ম্যাগাজিন বিষয়ক সম্পাদক মাসকুরা আক্তার, বইমেলা সম্পাদক সাগরিকা আক্তার, জাহিদা জাহান ছাড়াও ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম, হাসেম আলী ও প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি উপস্থিত ছিলেন।

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বাঘবিধবা, মুন্ডা, হরিজন সম্প্রদায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর ১৪০ জনের হাতে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল তুলে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সুন্দরবনঘেঁষা দাঁতনিখালি গ্রামের প্রথম আলো দুর্যোগ আশ্রয়কেন্দ্রে

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।

হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।

অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।