রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ শহরের সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণে এসে মো. আলামিন (১৩) নামের এক শিশু নিখোঁজ হয়েছে। ঘটনার তিন দিন পর গতকাল শুক্রবার বিকেলে তার মায়ের মুঠোফোনে অজ্ঞাত স্থান থেকে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুষ্কৃতকারীরা। বিষয়টি নিয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার পুলিশকে জানানো হয়েছে।
নিখোঁজ আলামিন গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের দুদুখানপাড়ার মো. নুরুল ইসলামের ছেলে। সে স্থানীয় দুদুখানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিনের মতো আলামিন গত মঙ্গলবার বিকেলে সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ মাঠে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণে অংশ নিতে এসে আর বাড়ি ফেরেনি।
আলামিনের পরিবার জানায়, ছোটবেলা থেকেই আলামিনের ফুটবল খেলার প্রতি অধিক ঝোঁক। সম্প্রতি গোয়ালন্দ বাজারসংলগ্ন সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজ মাঠে স্থানীয়ভাবে ফুটবল খেলার প্রশিক্ষণে আলামিন নিয়মিত যেত। মঙ্গলবারও বিকেলে সে ফুটবল খেলার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর বাড়ি না ফিরে যাওয়ায় পরিবার থেকে আত্মীয়স্বজনসহ সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করতে থাকে। কোথাও সন্ধান না পাওয়ায় দুই দিন পর বৃহস্পতিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে যায়। কিন্তু এ ব্যাপারে কর্তব্যরত পুলিশ কর্মকর্তা নিরুৎসাহিত করায় পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ফিরে যান।
আলামিনের মা নার্গিস খাতুন আজ শনিবার সকালে মুঠোফোনে বলেন, গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে প্রথমে তাঁর মুঠোফোনে অপরিচিত এক ব্যক্তি কল দিয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে ছেলেকে তাদের জিম্মায় রাখার কথা জানায়। তাকে মুক্ত করতে নগদ ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দ্রুত টাকা না দিলে ছেলের লাশ ফেরত দেওয়া হবে বলেও জানায়। এর পর থেকে ওই নম্বরে কথা না বলে ইমোতে কথা বলছে।
পরে তাৎক্ষণিকভাবে দুদুখানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের সঙ্গে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় এসে অভিযোগ করেন আলামিনের মা। পরিবারের চার ছেলের মধ্যে আলামিন তৃতীয়। তার বাবা নুরুল ইসলাম ঢাকায় ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। তাঁরা এখন শুধু আলামিনকে ফেরত চান। তিনি জানান, গতকাল দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের সঙ্গে কথা হয়েছে। থানায় অভিযোগ দেওয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে। ছেলেকে পেতে হলে অনেক কষ্ট করতে হবে বলে জানায়।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক মো. মনিরুল মিয়া বলেন, এ বিষয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে জিডি করা হয়েছে। তাঁরা স্কুলছাত্রকে উদ্ধারে তৎপর রয়েছেন। আশা করছেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে তাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হবেন।