পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র বিস্ফোরিত হয়ে কাশিনাথপুর ফায়ার সার্ভিসের এক গাড়িচালক মারা গেছেন। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের এক বাবুর্চি গুরুতর আহত হন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার কাশিনাথপুর বাজারে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রিফিলের সময় বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে।
নিহত গাড়িচালকের নাম আবদুর রাজ্জাক (৩৫)। তিনি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাঘাবাড়ী শেলা চাপড়ি গ্রামের সালাম মোল্লার ছেলে। আহত ব্যক্তির নাম জব্বার আলী (২৫)। তাঁর বাড়ি নীলফামারী জেলায়। তিনি কাশিনাথপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত হয়ে বাবুর্চি হিসেবে কাজ করেন।
কাশিনাথপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কাশিনাথপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে প্রায় চার বছর ধরে বাবুর্চির কাজ করেন আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত জব্বার আলী। পাশাপাশি তিনি কাশিনাথপুর বাজারের পাশে ব্লু বার্ড ইম্পেরিয়াল স্কুলের পুরাতন একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রিফিল করার ব্যবসা করতেন। তাঁর সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের গাড়িচালক আবদুর রাজ্জাকের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। আবদুর রাজ্জাক বাবুর্চি জব্বার আলীর রিফিলের দোকানে গিয়ে বসতেন, তাঁর কাজে সহায়তা করতেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর আবদুর রাজ্জাক ও জব্বার আলী মোটরসাইকেলে ওই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে বসেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রিফিল করার সময় বিকট শব্দে সেটি বিস্ফোরিত হয়। এতে দুজনেই গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা তাঁদের উদ্ধার করে দ্রুত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক গাড়িচালক রাজ্জাককে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাবুর্চি জব্বার আলীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কাশিনাথপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন কর্মকর্তা মো. আহসান আলী বলেন, ‘ওই দুজন যে অগ্নিনির্বাপণ রিফিলের ব্যবসা করতেন সেটি আমাদের জানা ছিল না, তা ছাড়া মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর স্টেশন থেকে যাওয়ার সময় তাঁরা আমাকে কিছু বলে যায়নি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে আমরা জানতে পারি তাঁরা আসলে আমাদের লোক। তাঁদের অগ্নিনির্বাপণ রিফিলের ব্যবসার অনুমতি আছে কি না, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখছেন।’
সাঁথিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল লতিফ বলেন, ‘খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ নিয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। জানতে পেরেছি অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রিফিলের সময় বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এখনো আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। তাঁরা থানায় এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগও দেননি।’