সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের সময় বেঁধে দেওয়া (আলটিমেটাম) হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেট জেলা শাখার নেতারা এ আলটিমেটাম দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ছাত্র আন্দোলনে যেসব ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা বাধা দিয়েছেন, তাঁদেরও সিটি করপোরেশন থেকে পদত্যাগ করতে হবে। আজ বুধবার বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তাঁরা এ দাবি জানান।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে নগর ভবন ঘেরাও করার কথা জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা। তাঁরা জানান, মেয়রসহ সিটি করপোরেশনের ‘স্বৈরাচারের দালালেরা’ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ না করলে ছাত্র-জনতা তাঁদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সিলেটের নেতারা সারা দেশে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ মতবিনিময় করেন। এ সময় তাঁরা সিলেটের চলমান পরিস্থিতি, নিজেদের কর্মসূচি, নির্বিচার ছাত্র-জনতা হত্যার বিচার দাবি, পরিকল্পিত লুণ্ঠন-ডাকাতি, সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আসাদুল্লাহ আল গালিব ও সহসমন্বয়ক ফয়সাল হোসেন, সিলেটের সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা সেলিম, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমন্বয়ক মো. জহিরুল ইসলাম, হাফিজুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। এ সময় সিলেট নগরের চৌহাট্টা চত্বরকে ‘বিজয় চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। শেষ দিকে এ চৌহাট্টা এলাকা ঘিরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে।
আসাদুল্লাহ আল গালিব তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তর্বর্তী সরকার কাজ করছে। ১৮ কোটি মানুষই এই সরকারের সঙ্গে আছে। আমরা একটা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই। অথচ কিছু কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নির্যাতনের মিথ্যা খবর পরিবেশন করছে। ছাত্র-জনতার সফল গণ–অভ্যুত্থানকে বিতর্কিত করতে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্টরা এটা করছে। এই দেশ ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে সবার। এখানে বৈষম্যের কোনো ঠাঁই নেই।’
ফয়সাল হোসেন বলেন, ‘সরকার প্রতিটি অন্যায় কর্মকাণ্ডের বিচার করবে। এ দেশ হবে সবার, বৈষম্যহীন। তবে প্রতিবিপ্লবের চেষ্টা করলে ভুল করবেন। এটা সফল হবে না। এটা হবে সুইসাইডাল অ্যাটেম্পট। প্রতিবিপ্লবের কোনো সুযোগ নেই। এই বাংলাদেশ সবার। এখানে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ ধর্মবর্ণ–নির্বিশেষে সম্প্রীতি আছে। এই সম্প্রীতি কেউ নষ্ট করতে পারবে না।’
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে কথা বলার জন্য সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামানের মুঠোফোনে কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশত্যাগের পর সিটি মেয়রের প্রকাশ্য উপস্থিতি দেখা যায়নি। এর আগে ২০২৩ সালের ২১ জুন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মেয়র হন আনোয়ারুজ্জামান।