নিখোঁজের চার দিন পর দুই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার, মিলেছে ধর্ষণের আলামত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিখোঁজের চার দিন পর নিখোঁজ দুই ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রাম থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে লাশ দুটির ময়নাতদন্তের পর বিকেলে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহত দুই শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নিহত দুই শিক্ষার্থী উপজেলার একটি মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্রী ছিল। তারা মাদ্রাসাতেই থাকত।

স্থানীয় লোকজন, মাদ্রাসা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে বাড়ি থেকে মাদ্রাসায় ফেরে ওই দুই শিক্ষার্থী। সকালে তাদের কক্ষের দরজা খোলা দেখতে পান মাদ্রাসার লোকজন। পরে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বিষয়টি দুই শিক্ষার্থীদের পরিবারের সদস্যদের জানান। দুই শিক্ষার্থীর বাবাসহ পরিবারের লোকজন ও মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা বিষয়টি নিয়ে জেলা শহরের কাজীপাড়ার কবিরাজ (খনকার) জামাল মিয়ার কাছে যান। দুই শিক্ষার্থী দ্রুত বাসায় ফিরে আসবেন বলে পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেন ওই কবিরাজ।

এর মধ্যে আজ সকালে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের সাদেকপুর মসজিদের পূর্বদিকের কাঁচার রাস্তার পাশে দুই শিক্ষার্থীকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে সকালে তাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা সুমন ভূইয়া ও ময়নাতদন্ত সম্পন্নকারী চিকিৎসক অনিক দেব প্রথম আলোকে বলেন, দুপুরে দুই শিক্ষার্থীর লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। তাদের স্পর্শকাতর স্থানে একাধিক আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। চার দিন আগে তারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ধর্ষণের বিষয়টি আরও নিশ্চিত হতে তাদের সোয়াব নেওয়া হয়েছে। সংগৃহীত সোয়াব পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হবে। দুই শিক্ষার্থীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।

নিহত এক ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করেন বলেন, মাদ্রাসার এক শিক্ষক ঘটনার পর থেকে একেক ধরনের কথা বলছেন। এ ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।

সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করার পরিবারের দাবিটি সঠিক নয়। দুই শিক্ষার্থীকে তারা হাসপাতালে মৃত অবস্থায় এনেছেন। মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক, প্রতিষ্ঠাতা ও শিক্ষার্থী কাউকেই পাওয়া যায়নি। তারা পলাতক। এ ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।