গোসাইরহাট পৌরসভা

এক যুগ পর প্রথম নির্বাচন

২০১১ সালের ৯ জুন এই পৌরসভা গঠন করা হয়। এরপর সীমানা নিয়ে জটিলতার কারণে আর নির্বাচন হয়নি।

শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র
শরীয়তপুর জেলার মানচিত্র

শরীয়তপুরের গোসাইরহাট পৌরসভা গঠিত হয়েছে ২০০৩ সালে। এরপর সীমানা নিয়ে জটিলতার কারণে আর নির্বাচন হয়নি। এবার সেই জটিলতা দূর হওয়ায় পৌরসভা গঠনের এক যুগ পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছে।

আগামী ১৭ জুলাই শরীয়তপুরের গোসাইরহাট পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর স্থানীয় বাসিন্দারা আনন্দ মিছিল করেছেন। সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণার প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছেন। সব মিলিয়ে পৌর এলাকায় একধরনের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

গোসাইরহাট পৌর কার্যালয় ও স্থানীয় সূত্র জানায় ২০১১ সালের ৯ জুন গোসাইরহাট উপজেলা সদরকে পৌরসভা ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ। এরপর পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ায় একাধিক মামলা হয়। এসব মামলার কারণে দীর্ঘদিনেও নির্বাচন হয়নি। এতদিন একজন সরকারি কর্মকর্তাকে পৌর প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে পৌরসভার কার্যক্রম চালানো হয়েছে।

জেলা নির্বাচন কার্যালয় ও গোসাইরহাট পৌরসভা সূত্র জানায়, গোসাইরহাট উপজেলা সদরটি ইদিলপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। ২০০৩ সালে ওই ইউনিয়নের সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১১ সালে তৎকালীন সংসদ সদস্য প্রায়ত আবদুর রাজ্জাকের আধা সরকারি পত্রের  (ডিও লেটার) ভিত্তিতে উপজেলা সদরের ১৭ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে পৌরসভা ঘোষণা করে স্থানীয় সরকার বিভাগ। পৌরসভার কার্যক্রম চালানোর জন্য তখন সেখানে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পৌরসভার প্রশাসক নিযুক্ত হন।

 গত বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন গোসাইরহাট পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের তফসিল ঘোষণা করেছে। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৮ জুন। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ জুন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২৫ জুন। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ২৬ জুন। আর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ১৭ জুলাই।

গোসাইরহাট পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর শুক্রবার পৌরবাসীর ব্যানারে আনন্দ মিছিল করেছেন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা তৎপরতা শুরু করেছেন। তাঁরা সবাই স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতা। তাঁদের সমর্থকেরা ছবি দিয়ে পোস্টার তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।

গোসাইরহাট পৌরসভা মহেশ্বরপট্টি এলাকার বাসিন্দা অর্নিবাণ ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন থেকে প্রতিক্ষায় ছিলাম নির্বাচনের জন্য। নানা আইনী মারপ্যাঁচে একটি মহল নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করে রেখেছিল। এখন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা আনন্দিত, উৎফুল্ল। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছে আছে।’

গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক কাফি বিন কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন তফসিল প্রকাশ করেছে। নির্বাচনের জন্য জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে রির্টানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে সহকারী রির্টানিং কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়েছে। রোববার তফসিলের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। এরপর আমরা নির্বাচন অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু করব।’