রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযানের সময় জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক লীগের এক নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাঁকে দ্বিতীয়বারের মতো গ্রেপ্তার করে। তবে ডিবির সদস্যদের মারধর করে পালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি যে হাতকড়াটি নিয়ে পালিয়ে যান, তা উদ্ধার করা যায়নি।
গ্রেপ্তার রুবেল আলী উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার ইউসুফপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। চারঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. হুমায়ূন কবির ও সাধারণ সম্পাদক মনিমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
হুমায়ূন বলেন, ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাঁরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা হিসেবে রুবেলকে বহিষ্কার করবেন। এমন নেতা তাঁদের সংগঠনের প্রয়োজন নেই।
এর আগে গত বুধবার বিকেলে হাতকড়া পরানো অবস্থায় রুবেল আলী পুলিশের ওপর হামলা করে হাতকড়া নিয়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। হামলায় ডিবি পুলিশের দুই কনস্টেবল আহত হন। ডিবি পুলিশ জানায়, গত বুধবার বিকেলে ইউসুফপুর কান্দিপাড়া গ্রামের মখলেসুর রহমানের বাড়িতে অভিযান চালায় ডিবির তিন সদস্যের একটি দল। অন্য একটি দল ইউসুফপুর বাজারে অপেক্ষা করছিল। অভিযানে ফেনসিডিলসহ রুবেল আলী ও রায়হানকে আটক করে ডিবি।
আটকের পর হাতকড়া পরানোর পর রুবেলের বাবা মখলেসুর আলী ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ বলে চিৎকার শুরু করেন। তখন রুবেলের আরও দুই ভাই পাভেল, সাব্বিরসহ তাঁদের ১০-১২ জন সহযোগী ঘটনাস্থলে আসেন। এ সময় রুবেলের নেতৃত্বে দেশীয় ধারালো অস্ত্র নিয়ে তিন পুলিশ সদস্যের ওপর হামলা করেন তাঁরা। এ হামলায় কনস্টেবল ইউসুফ আলী ও বিশ্বজিৎ কুমার আহত হয়েছেন। তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় অস্ত্র, মাদক ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে তিনটি মামলা হয়েছে। চারঘাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, এসব মামলায় আগে তিনজনকে ধরা হয়েছিল। তাঁদের নিয়ে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে রুবেলকে ধরা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে রুবেলকে কোথা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এ বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, পুলিশের ওপর হামলা করে পালিয়ে গিয়ে রুবেল অন্যের সহযোগিতায় হাতকড়া ভেঙে পানিতে ফেলে দেন। এ জন্য রাতে আর হাতকড়া উদ্ধার করা যায়নি।