বরগুনার পাথরঘাটার তিন সাংবাদিকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। স্থানীয় দুটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও একটি ফেসবুক আইডি থেকে একটি সংবাদ সম্মেলন লাইভ করায় তাঁদের বিরুদ্ধে এই মামলা হয়। নির্যাতনে অভিযুক্ত সৌদিপ্রবাসী আল মামুনের চাচাতো ভাই লিটন হাওলাদার বাদী হয়ে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৪ এপ্রিল এই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন স্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল পাথরঘাটা নিউজ ও দৈনিক আজকের পত্রিকার পাথরঘাটা প্রতিনিধি তারিকুল ইসলাম ওরফে কাজী রাকিব, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ২৪ ঘণ্টা নিউজ ও মোহনা টিভির পাথরঘাটা প্রতিনিধি সুমন মোল্লা ও দৈনিক কালবেলার পাথরঘাটা প্রতিনিধি আল আমিন ওরফে ফোরকান, পাথরঘাটা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা গৃহবধূ আসমা আক্তার, চরদুয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মজিবর রহমান ও সিলেটের জিন্দাবাজার এলাকার অলিউল্লাহ ওসমান চৌধুরী।
পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পাথরঘাটা থানা-পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী, পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্বামী মনির হোসেনকে জিম্মি করে নির্যাতনের অভিযোগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি পাথরঘাটা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন গৃহবধূ আসমা আক্তার। তিনি ও তাঁর স্বামী মনির হোসেনের বিরুদ্ধে সৌদিপ্রবাসী আল মামুনের মদদে ১৩টি মামলা করা হয়েছে। এর একটি মামলায় গ্রেপ্তার হন মনির হোসেন। এ ঘটনায় একের পর এক মিথ্যা মামলা ও মামলার মদদদাতা হিসেবে চিহ্নিত করে আল মামুনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন আসমা আক্তার। সংবাদ সম্মেলনটি নিউজ পোর্টাল পাথরঘাটা নিউজে লাইভ দেখান সাংবাদিক তারিকুল ইসলাম। একইভাবে ওই সংবাদ সম্মেলন স্থানীয় অপর অনলাইন নিউজ পোর্টাল ২৪ ঘণ্টা নিউজে লাইভ দেন সাংবাদিক সুমন মোল্লা। এ ছাড়া সাংবাদিক আল আমিন তাঁর ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করেন।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য চেষ্টা করেও সৌদিপ্রবাসী আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে মামলার বাদী লিটন হাওলাদারের মুঠোফোনে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক জাফর ইকবাল। তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, পাথরঘাটা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আসমা আক্তারের সংবাদ সম্মেলন সাংবাদিকেরা প্রচার করেছেন। ওই প্রচারে আসমা আক্তারের লিখিত বক্তব্যও ছিল। তবে কেন সাংবাদিকদের নামে এ হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা করা হলো? বিভিন্ন সময় হয়রানিমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। আবারও তাঁরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানাচ্ছেন।