ফেল করেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায়, সমালোচনার মুখে পাল্টাল ফল

নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় ফেল করেছেন। তবু তাঁর রোল নম্বর রয়েছে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত ব্যক্তিদের তালিকায়। বিষয়টি নজরে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনায় মেতে ওঠেন অনেকেই। সমালোচনার মুখে ফেল করা ওই শিক্ষার্থীকে বাদ দিয়ে আবারও নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে সেই তালিকা নিয়েও তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।

খাগড়াছড়িতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে তৈরি হয়েছে এমন হযবরল অবস্থা। নিয়োগ নিয়ে উঠেছে অনিয়মের অভিযোগ। তবে ফেল করা প্রার্থীর রোল নম্বর চূড়ান্ত তালিকায় আসাকে মুদ্রণের ভুল জানিয়ে নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি বলে দাবি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের।

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদে হস্তান্তরিত প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের সহকারী শিক্ষক পদের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয় গত ২২ সেপ্টেম্বর। সেখানে ১ হাজার ২৪৯ জন প্রার্থীকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়। পরে ২ থেকে ৫ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পরীক্ষা শেষে গত শুক্রবার চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ৩৩৭ জনের রোল নম্বর প্রকাশ করে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ।
চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের ওই তালিকায় ৭৭১ রোল নম্বরের প্রার্থীকে রাখা হয়, যদিও তাঁর রোল নম্বর লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকায় ছিল না। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনায় মেতে ওঠেন প্রার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে লিখিত পরীক্ষায় ফেল করা ওই প্রার্থীকে বাদ দিয়ে আজ সংশোধিত চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করেছে পার্বত্য জেলা পরিষদ। তবে সংশোধিত ফলাফলে ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে আরও চারজনকে বাদ দিয়ে নতুন করে চারজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য পার্থ ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ‘নিয়োগ দেওয়ার কথা ২৫৭ জনকে, অথচ চূড়ান্ত করা হয়েছে ৩৩৭ জনকে। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে ত্রুটিপূর্ণ প্রশ্নে। নিয়োগে কোনো নিয়ম মানা হয়নি, কোটা সংরক্ষণ করা হয়নি। জেলা প্রশাসকের কোনো প্রতিনিধিও ছিল না। মেধাক্রম অনুসারে নামসহ ফল প্রকাশের পরিবর্তে কেবল রোল নম্বর প্রকাশ করা হয়েছে।  লিখিত পরীক্ষায় ফেল করা প্রার্থী চূড়ান্ত ফলাফলে থাকা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগপ্রক্রিয়া চালানোর প্রমাণ।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মুদ্রণজনিত ভুলে লিখিত পরীক্ষায় ফেল করা এক শিক্ষার্থীর রোল নম্বর চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত ব্যক্তিদের তালিকায় এসেছে। একই সঙ্গে আরও চারজন ভুলবশত তালিকায় ছিলেন। এসব ভুল সংশোধন করে আবার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। নিয়োগে কোনো অনিয়ম হয়নি।’