ময়মনসিংহে ব্রহ্মপুত্র নদের খননকাজ শুরু হয় ২০১৯ সালের জুন মাসে। খননকাজ শুরুর পর থেকেই নাগরিক সমাজের নানা অভিযোগ। খননের নামে ব্রহ্মপুত্রকে ১০০ মিটার খালে পরিণত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা। খননের বালু রাখা হচ্ছে নদের পড়েই। চার বছর হয়ে গেলেও এখনো বাড়েনি নাব্যতা। উল্টো খনন হওয়া নদের বুকে স্থানে স্থানে জেগে উঠছে চর। এ নিয়ে প্রথম আলো কথা বলেছে ময়মনসিংহের নাগরিক সংগঠন জন উদ্যোগের আহ্বায়ক আইনজীবী নজরুল ইসলামের (চুন্নু) সঙ্গে।
খননকাজের শুরু থেকেই নাগরিক সমাজের আপনারা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। কেন?
নজরুল ইসলাম: এ খননকাজ শুরুর আগে ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের উদ্যোগে খনন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নাগরিকদের একটি মতবিনিময় সভা হয়। সেখানে আমরা বলেছিলাম, আগে নদের দুই পাড়ের সীমানা চিহ্নিত করতে। না হলে যে ১০০ মিটার খনন করা হবে, শুধু ততটুকুই হবে ব্রহ্মপুত্র নদ। বাকিটুকু অবৈধ দখল হয়ে যাবে। এখন বাস্তবিক অর্থে সেটাই হচ্ছে। আমি বলব, খননকাজটি শুরু হয়েছিল অপরিকল্পিতভাবে।
খননের চার বছর শেষ। এই সময়ের মধ্যে সুফল কতটুকু পাওয়া গেছে?
নজরুল ইসলাম: চার বছরে কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। একদিকে খনন হলে অন্যদিকে ভরাট হচ্ছে। শুধু শুধু জনগণের বিপুল অর্থের অপচয় হচ্ছে। অথচ ২০২২ সালে খনন প্রকল্পের তৎকালীন পরিচালক বলেছিলেন, ২০২৩ সালের জুন মাস থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে ওয়াটার বাস চলবে। এটি আন্তর্জাতিক মানের নৌপথ হবে। এখন সেটি আদৌ হবে কি না, সেটি নিয়ে সংশয় আছে।
খননকাজের সুফল না পাওয়ার কারণ কী বলে মনে করেন?
নজরুল ইসলাম: সুফল না পাওয়ার কারণ যথাযথ পরিকল্পনার অভাব। ব্রহ্মপুত্রের উৎসমুখে খনন না করে বাকি এলাকায় খনন করা হচ্ছে। এতে প্রতিবছর পলি জমে যাচ্ছে। নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আমরা উৎসমুখে খনন করার কথা বললে খনন প্রকল্পের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের জরিপে জানতে পেরেছে, উৎসমুখ খুলে দিলে বেশি পানির কারণে নদে ভাঙন দেখা দেবে।
খনন প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে এক বছর। ওই এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব?
নজরুল ইসলাম: চার বছরে কোনো সুফল আসেনি। আর এক বছরে কতটুকু সুফল পাওয়া যাবে, সেটি সবাই বুঝতে পারছে। ব্রহ্মপুত্র খননের ফলে মূলত হচ্ছে বালুর ব্যবসা। এতে একশ্রেণির মানুষ উপকৃত হচ্ছে। এর জন্য নষ্ট হচ্ছে দেশের হাজার কোটি টাকা। এটি দেশের অনেক বড় ক্ষতি।