২০১১ সালের এই দিনে সিনেমার জন্য শুটিং স্পট দেখে মাইক্রোবাসে ঢাকায় ফেরার পথে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদ, সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ গাড়িটির পাঁচজন যাত্রী। মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনার ১২তম বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করেছে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
আজ শনিবার তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরদের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে ঘিওর উপজেলার জোকায় দুর্ঘটনাস্থলের স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বৃক্ষরোপণ, মানববন্ধন ও স্মৃতিচারণামূলক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির জেলা শাখার সভাপতি দীপক ঘোষ, সামাজিক আন্দোলনকর্মী ইকবাল হোসেন, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব চক্রবর্তী, প্রথম আলোর মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি আবদুল মোমিন, বারসিকের জেলা সমন্বয়কারী বিমল রায়, তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর স্মৃতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিপন আনসারী, ঘিওর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রামপ্রসাদ সরকার, রেইনবো থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা গিনি আলম, জেলা প্রগতি লেখক সংঘের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
মানববন্ধনে গোলাম ছারোয়ার বলেন, তারেক মাসুদ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চলচ্চিত্রকার ছিলেন। এ ছাড়া খ্যাতিমান সাংবাদিক ও চিত্রগ্রাহক ছিলেন মিশুক মুনীর। তাঁদের স্মরণে দুর্ঘটনাস্থলে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ করার মধ্য দিয়ে তাঁদের কাজের মূল্যায়ন করতে হবে।
দীপক কুমার ঘোষ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে নিরাপদ সড়ক এবং ঢাকা থেকে পাটুরিয়া পর্যন্ত রেললাইনের দাবি জানিয়ে আসছে মানিকগঞ্জ ও রাজবাড়ীর বাসিন্দারা। সরকারের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণে সরকারিভাবে নীতিগত সিদ্ধান্তও হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এই রেললাইন নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
বিপ্লব চক্রবর্তী বলেন, তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুটি মামলা করা হলেও গত ১০ বছরে তা নিষ্পত্তি হয়নি। দ্রুত সময়ের মধ্যে মামলা দুটির নিষ্পত্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
২০১১ সালের ১৩ আগস্ট মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার শালজানা গ্রামে ‘কাগজের ফুল’ চলচ্চিত্রের শুটিং স্পট দেখে ঢাকায় ফিরছিলেন তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ তাঁদের সহকর্মীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঘিওরের জোকা এলাকায় তাঁদের বহনকারী মাইক্রোবাসের সঙ্গে চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা বিপরীতমুখী ডিলাক্স পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তারেক মাসুদ, মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন ঘটনাস্থলে নিহত হন।