ফরিদপুরের ভাঙ্গায় স্থানীয় সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সনের অনুসারীদের বিরুদ্ধে কিবরিয়া মাতুব্বর (৩৬) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে হাতুড়ি ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের শরীফাবাদ বাজারের পাশে এ ঘটনা ঘটে।
আহত কিবরিয়া উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঘারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তিনি ওই ইউনিয়নের বিবিরকান্দা গ্রামের বাসিন্দা।
কিবরিয়া স্থানীয় রাজনীতিতে ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-চরভদ্রাসন-সদরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। গুরুতর আহতাবস্থায় তাঁকে প্রথমে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তাঁকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) পাঠানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রণেশ চন্দ্র পণ্ডিত বলেন, আঘাতের কারণে কিবরিয়া মাতুব্বরের বাঁ হাতের একটি হাড় ভেঙে গেছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন ছিল।
ঘারুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, আগামী শনিবার অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহর উপস্থিত থাকার কথা আছে। ওই সমাবেশ ঘিরে গতকাল বিকেলে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার পর কয়েকজনের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে বাড়িতে ফিরছিলেন কিবরিয়া। পথে শরীফাবাদ বাজারের পাশে তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেওয়ার সময় কিবরিয়া মাতুব্বর সাংবাদিকদের বলেন, শরীফাবাদ বাজারের কাছে পৌঁছানোর পর তাঁর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ঘারুয়া ইউনিয়নে গতবারে নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে পরাজিত প্রার্থী ফিরুজুর রহমান ওরফে নিরু খলিফার নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ফিরুজুর রহমান সংসদ সদস্য নিক্সন চৌধুরীর সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন।
কিবরিয়া আরও বলেন, ‘হামলাকারীরা হাতুড়ি ও রড দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। একপর্যায়ে আমাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে চলে যায়।’
কিবরিয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে ফিরুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এ ঘটনা ঘটাইনি। তাঁরা (কিবরিয়া) কয়েকজন ইজিবাইকে করে ফিরছিলেন। তখন আমার ভাতিজা যুবরাজ তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, “নিক্সন চৌধুরীর জনসভা থেকে ফিরলেন?” এ কথা শুনে কিবরিয়া নিক্সন চৌধুরীকে গালিগালাজ করেন এবং ওই এলাকার লোকদের উদ্দেশে আজেবাজে কথা বলেন। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে কিবরিয়াকে পিটিয়ে আহত করেন।’
ফিরুজুর দাবি করেন, শরীফাবাদ বাজারের পাশে যখন ঘটনা ঘটে, তখন তিনি ভাঙ্গা পাইলট স্কুলের কাছে ছিলেন। তিনি ঘটনাস্থলে থাকলে হামলার ঘটনা ঘটত না। অথচ অন্যায়ভাবে কিবরিয়া তাঁকে দোষারোপ করছেন।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনায় থানায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে হামলার ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।