সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের বাসিন্দা কামাল হোসেনের (৩৮) লাশ দেশে এসেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে আজ শুক্রবার সকাল আটটায় জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়। এ সময় উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কামাল হোসেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের মেসতলা গ্রামের নজির আহমেদের ছেলে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর মরদেহ ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। গত ৩ সেপ্টেম্বর আরব আমিরাতে তাঁর মৃত্যু হয়।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া কামাল হোসেনের মরদেহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী দাফন করা হয়েছে। তাঁরা সেখানে উপস্থিত থেকে সার্বিক বিষয়ে খেয়াল রেখেছেন যেন কেউ স্বাস্থ্যবিধি অমান্য না করেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৭ বছর আগে পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে কামাল হোসেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাড়ি জমিয়েছিলেন। সেখানে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতেন তিনি। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হওয়ার পর গত ৩০ সেপ্টেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ শহরের একটি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। কামাল হোসেনের দুই মেয়ে রয়েছে।
কামাল হোসেনের বাবা নজির আহমেদ বলেন, প্রশাসনের নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গতকাল রাতে লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে রওনা দেন। আজ সকাল ৭টা ২০ মিনিটে মরদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। পরে প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী সকাল আটটায় গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে ছেলের লাশ দাফন করেছেন। ছেলেটাকে এভাবে বিদায় দিতে হবে কখনো ভাবেননি। তাঁর পুত্রবধূ এখন দুটি সন্তান নিয়ে কীভাবে বাঁচবে, সেই চিন্তায় আছেন নজির আহমেদ।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া বলেন, মাঙ্কিপক্স বা এমপক্স একটি ভাইরাসজনিত ছোঁয়াছে রোগ, যার কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাঁর জানামতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। কামাল হোসেনের পরিবারের আট সদস্যকে পর্যবেক্ষণ রাখা হয়েছে।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান বলেন, কামাল হোসেনের মরদেহ দাফনের বিষয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী কঠোর নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই দাফন করা হয়েছে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তার উপস্থিত ছিলেন।