রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার দুর্গম দুমদুম্যাছড়ির পুন্নমণিছড়ায় বিজিবির সহায়তায় বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার দুপুরে
রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার দুর্গম দুমদুম্যাছড়ির পুন্নমণিছড়ায় বিজিবির সহায়তায় বিদ্যালয় স্থাপিত হয়েছে।  গত মঙ্গলবার দুপুরে

দুর্গম এলাকায় বসতি গড়ে ওঠে ৪০ বছর আগে, এত বছর পর গ্রামবাসী পেল বিদ্যালয়

রাঙামাটি জুরাছড়ি উপজেলার দুমদুম্যা ইউনিয়নের দুর্গম তিন গ্রামের গোড়াপত্তন হয় ৪০ বছর আগে। এরপর এত বছরেও সেখানে কোনো বিদ্যালয় গড়ে ওঠেনি। গ্রামের শিশুদের লেখাপড়া করতে হলে যেতে হতো উপজেলা বা জেলা সদরে। ২০১০ সালের দিকে স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদা তুলে একটি বেড়ার ঘরে শিশুদের অক্ষরজ্ঞান শেখানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। তবে সেই অস্থায়ী বেড়ার ঘরটি টেকেনি বেশি দিন। এ অবস্থায় ওই তিন গ্রামের শিশুদের লেখাপড়ার সহায়তায় এগিয়ে এসেছে বিজিবি। বিজিবির কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে ওই এলাকার পুন্নমণিছড়ায় গড়ে তোলা হয় একটি পাকা বিদ্যালয়। গত মঙ্গলবার ছিল কজইতলীপাড়া, পুন্নমণিছড়া ও এইডছড়ি পাড়ার মানুষজনের জন্য বিশেষ দিন। বিজিবির পক্ষ থেকে ওই দিন বিদ্যালয়টি বুঝিয়ে দেওয়া হয় গ্রামবাসীকে।

দুমদুম্যার তিন গ্রামে এখন স্বস্তি আর আনন্দের ঢেউ। গ্রামের অভিভাবকেরা শিশুদের নিয়ে আসছেন বিদ্যালয় দেখাতে। গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৩০ জুলাই কাপ্তাই ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক ও ওয়াগ্গাছড়া জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান ভূঁইয়া কজইতলীপাড়া, পুন্নমণিছড়া ও এইডছড়ি পাড়া পরিদর্শন করে একটি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দেন।

পরবর্তী সময়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ মহাপরিচালকের নির্দেশনা অনুসারে স্কুলঘর নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হয়। স্কুলঘর নির্মাণে সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন কাপ্তাই ব্যাটালিয়ন ও ওয়াগ্গাছড়া জোন কমান্ডার লে. কর্নেল মোহাম্মদ তানজিলুর রহমান ভূঁইয়া। এক কক্ষবিশিষ্ট বিদ্যালয়টি একসঙ্গে অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করা সম্ভব। তবে বিদ্যালয়ে কোনো চেয়ার, টেবিল ও বেঞ্চ নেই। বাঁশ দিয়ে শিশুদের বসানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। এই তিন পাড়ায় চাকমা সম্প্রদায়ের ৫৫টি পরিবার রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে ৪৭ জন শিক্ষার্থী। তাদের প্রাথমিক পাঠদানের জন্য একজন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

পুন্নমণিছড়া পাড়ার কার্বারি (গ্রামপ্রধান) শান্তিময় চাকমা বলেন, ‘বহু বছর ধরে আমাদের পাশাপাশি তিন গ্রামে কোনো বিদ্যালয় ছিল না। বিজিবি স্কুলঘর নির্মাণ করে দেওয়ায় অনেক উপকার হয়েছে। এলাকার শিশুরা এখন থেকে নিয়মিত পড়তে পারবে। আমাদের গ্রামগুলোর ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটারের ভেতরে কোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।’

দুমদুম্যা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শান্তিরাজ চাকমা বলেন, পুন্নমণিছড়া পাড়ায় বিজিবি একটি বিদ্যালয় স্কুলঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। এর আগে ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এক ঝুপড়ি ঘর (বাঁশ) দিয়ে। সেটি ভেঙে যাওয়ার পর কোনো স্কুল ঘর ছিল না। শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিল।