লক্ষ্মীপুর জেলার মানচিত্র
লক্ষ্মীপুর জেলার মানচিত্র

ঢাকায় সমাবেশে নিতে সুদমুক্ত ঋণের প্রলোভন, লক্ষ্মীপুরে ৭ গাড়ি জব্দ

ঢাকায় সমাবেশে যোগ দিলেই সর্বনিম্ন এক লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়েছে। গতকাল রোববার রাতে ‘অহিংস আন্দোলন বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের সমাবেশে নেওয়ার জন্য লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার তিন শতাধিক নারী-পুরুষ ও কিশোর-কিশোরীকে জড়ো করা হয়।

পরে রাতেই স্থানীয় লোকজন তাঁদের ঘেরাও করে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে খবর দেন। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাতটি গাড়ি জব্দ করেছেন। এর মধ্যে তিনটি বাস ও চারটি মাইক্রোবাস।

ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার সময় ৮৫ জনকে আজ সোমবার সকালে তিনটি থানায় নেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় ২৮ জন, রামগতি থানায় ৪৬ ও কমলনগর থানায় ১১ জন আছেন।

পুলিশ ও বাসযাত্রী নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি চক্র আজ ঢাকার শাহবাগ কিংবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশে যোগ দিতে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করে। ঋণের আবেদন ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে চক্রটি এক হাজার টাকা করে নিয়েছে। ঋণপ্রত্যাশী ও সম্মেলনে উপস্থিতির জন্য দেওয়া হয়েছে টোকেন। টোকেনধারী সবাইকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে এক লাখ থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে।

জব্দ করা ‘ঢাকা এক্সপ্রেস’ নামের বাসের চালক মো. সোহেল বলেন, মো. আলমগীর ও মো. সিরাজ নামের দুই ব্যক্তি ঢাকায় যেতে তাঁদের বাসটি ভাড়া করেন। তবে স্থানীয় লোকজন বাসটি আটকের পর ওই দুজন সটকে পড়েছেন।

লক্ষ্মীপুরের চর লরেঞ্চ গ্রামের গৃহবধূ পারুল আক্তার বলেন, প্রথমে ১০ টাকার বিনিময়ে টোকেন নিতে হয়েছে। এরপর যাতায়াত খরচ বাবদ দুই ব্যক্তি তাঁদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে নিয়েছেন। ওই দুজন নিজেদের ঋণ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। ঢাকায় সমাবেশে যোগ দেওয়ার পরের দিন তাঁদের এক লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল।

এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮৫ জনকে থানায় আনা হয়েছে। তাঁদের ঋণ দেওয়ার কথা বলে ঢাকায় নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গ্রামের মানুষকে প্রতারণার মাধ্যমে ঢাকায় নেওয়ার মূল হোতাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ‘অহিংস আন্দোলন বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে ঢাকায় সমাবেশ করার জন্য তাঁদের জড়ো করা হচ্ছিল। ঢাকায় সমাবেশের নামে মূলত সরকারকে বিব্রত করার উদ্দেশ্যে এটি করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন।