ছোট ভাইয়ের খতনা উপলক্ষে বাড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজন; তৈরি করা হয়েছে প্যান্ডেল, টানানো হয়েছে শামিয়ানা। রান্নার কাজও শেষ। খানিক বাদেই অতিথিরা আসবেন। এর মধ্যেই খবর এল সড়কে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বড় ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। মুহূর্তের আনন্দ উৎসব পরিণত হয় বিষাদে। আজ শনিবার দুপুরে নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার অর্জুনতলা গ্রামে ঘটেছে এমন ঘটনা।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত জিহাদ হোসেন (১৩) ওই গ্রামের পরিবহন ব্যবসায়ী আবদুল আজিজের ছেলে। জিহাদের পরিবার চট্টগ্রাম নগরে বসবাস করে। সেখানে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল জিহাদ। ছোট ভাইয়ের খতনা অনুষ্ঠান উপলক্ষে কয়েক দিন আগে গ্রামের বাড়িতে এসেছিল সে।
বিকেলে নিহত জিহাদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির আঙিনায় বিশাল শামিয়ানা টানানো এবং রাস্তার দুই পাশে আলোকসজ্জার বাতি। বাড়ির ভেতরে এক পাশে রাখা হয়েছে লাশের খাটিয়া। অন্য পাশে লাশ গোসলের জন্য পানি গরম করা হচ্ছে। ওই বাড়ির বাসিন্দা জহিরুল আলম বলেন, আত্মীয়স্বজনেরা যখন অনুষ্ঠানে খাবারদাবারের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই দুর্ঘটনার খবরটি বাড়িতে পৌঁছে। মুহূর্তে অনুষ্ঠানস্থলে বিষাদের ছায়া নেমে আসে।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. খোরশেদ আলম বলেন, দুপুরে নানার বাড়ি থেকে মামা জাহিদকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিল জিহাদ। সেনবাগ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশের সড়কের মুখে বৃষ্টিতে ভেজা পাকা সড়কে মোটরসাইকেলটি উল্টে যায়। এতে মামা-ভাগনে দুজনই গুরুতর আহত হন। আশপাশের বাসিন্দারা তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিহাদকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত জাহিদকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সেনবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে সেনবাগ থানা-পুলিশ ওই কিশোরের লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরিবারের সদস্যদের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফনের অনুমতি দিয়ে লাশটি হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।