ঝিনাইদহে গুলি করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে হত্যার কারণ খুঁজছে পুলিশ

শামীম হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

যাঁদের সঙ্গে চলাফেরা, তাঁদের সঙ্গেই বিরোধ চলছিল ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক নেতা শামীম হোসেনের। আবার রাজনৈতিক বিরোধও ছিল। তবে ঠিক কী কারণে তাঁকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, তা খুঁজছে পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজ বাড়ির পাশে শামীম হোসেনকে (৪৫) গুলি করে ও কুপিয়ে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাসিন্দারা পরে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। শামীম পৌর সেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

আজ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। এখন পর্যন্ত মামলাও হয়নি। নিহত শামীমের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে দুপুরের পর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হতে পারে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শামীম হোসেন উপজেলার শুড়া গ্রামের গোলাম রসুল মিয়ার ছেলে। তাঁর স্ত্রী পাপিয়া খাতুন গৃহিণী। এই দম্পতির বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। একমাত্র ছেলে মাহিন হোসেন নবম শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে।

ঘটনার সময় বাড়ির পাশে ব্যাডমিন্টন খেলছিল মাহিন হোসেন। সে প্রথম আলোকে বলে, ওই সময় তার প্রাইভেট শিক্ষক ফোন দিয়ে দ্রুত বাড়িতে গিয়ে তার বাবা কোথায় আছেন, সেটা দেখার জন্য বলেন। মাহিন বাড়িতে এসে তার বাবাকে পায় না। বাড়ির লোকজনও কিছু বলতে পারে না। পরে বাড়ির পাশের লোকজন ডেকে তার বাবাকে গুলি করার খবর দেন। হাসপাতালে ছুটে গিয়ে সে দেখে, তার বাবা আর নেই।

বাবাকে কারা হত্যা করেছে, তা বলতে পারছে না মাহিন। সে বলে, তার বাবা রাজনীতি করতেন। বাড়িতে থেকে কৃষিকাজ দেখাশোনা করতেন। কোনো খারাপ কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতেন না। তারপরও কেন তাঁকে হত্যা করা হলো, তা বুঝতে পারছে না।
হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাক্তার জামিনুর রশিদ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই শামীম হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। রোগীর অবস্থা দেখে বোঝা যাচ্ছে, গুলি ও আঘাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করে বলেন, শামীমের সঙ্গে বেশ কিছু মানুষের যোগাযোগ ছিল, যাঁরা সমাজে নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা নিয়মিত শামীমের বাড়িতেও আসতেন। তাঁদের সঙ্গে শামীমের কোনো বিরোধ থেকে এই হত্যাকাণ্ড হতে পারে। আবার রাজৈনতিক প্রতিপক্ষও ছিল তাঁর। যাঁরা শামীমের সব কর্মকাণ্ড মানতে চাইতেন না।

ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচন বাধাগ্রস্থ করতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে সন্ত্রাসীরা। জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তিনি এর তীব্র নিন্দা জানান।

হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, হত্যার কারণ জানতে কাজ করছে পুলিশ। তবে শামীম হোসেনের সঙ্গে বেশকিছু খারাপ মানুষের যোগাযোগ ছিল, যেটাকে প্রাধান্য দিয়ে তাঁরা তদন্ত করে যাচ্ছেন। আশা করছেন, দ্রুতই হত্যাকারী শনাক্ত করতে সক্ষম হবেন।