গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন

তদন্তের দ্বিতীয় দিনে ৫ শতাধিক ব্যক্তির বক্তব্য নেওয়া হবে

তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য অপেক্ষা করছেন নির্বাচন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। আজ সকালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সম্মেলনকক্ষের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপনির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে আজ বুধবার সকাল নয়টায় দ্বিতীয় দিনের তদন্ত শুরু হয়েছে। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত তদন্তকাজ চলবে। সাঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সম্মেলনকক্ষে তদন্তকাজ চলছে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে, আজ দ্বিতীয় দিনে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির বক্তব্য নেওয়ার কথা। এর মধ্যে ৪০ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা; ২৭৮ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা; ২০০ জন পোলিং এজেন্ট; সাঘাটা উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক; মিডিয়া ব্যক্তিত্ব; সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নওগাঁ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা; সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও); উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বক্তব্য নেওয়ার কথা রয়েছে।

আজ সকালে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুল মোত্তালিব বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তদন্তকাজ চলছে। তিন দিনব্যাপী এ তদন্তকাজ চলবে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। এতে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অন্তত ৬৮৫ জনের বক্তব্য নেওয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার প্রথম দিনে গাইবান্ধা সার্কিট হাউস মিলনায়তনে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট অন্তত ১৪০ জনের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।

আজ সকালে তদন্ত কমিটির সঙ্গে সাক্ষাতের পর নাম প্রকাশ না করার শর্তে নির্বাচনসংশ্লিষ্ট ছয়জন বলেন, তদন্ত কমিটি তাঁদের কাছে নির্বাচনের দিনের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চায় এবং বিস্তারিত শোনে। তাঁরা তদন্ত কমিটিকে বলেছেন, তাঁরা যেসব কেন্দ্রে ছিলেন, সেই কেন্দ্রগুলোতে ভোট সুষ্ঠু হয়েছে।

এর আগে ১৩ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে ইসি। কমিটির আহ্বায়ক বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন যুগ্ম সচিব কামাল উদ্দিন বিশ্বাস ও শাহেদুন্নবী চৌধুরী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এ কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

১২ অক্টোবর সকাল আটটায় গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোটের দিন দুপুরে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মোট পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চারজন ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এরপর গোপন বুথে ঢুকে ভোট নেওয়াসহ নানা অনিয়ম সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখে ইসি একে একে ৫১টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত করে। এরপর বেলা দুইটার দিকে উপনির্বাচন বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

স্থগিত করা কেন্দ্র বাদে বাকি কেন্দ্রগুলোর ফলাফল ঘোষণার দাবিতে ভোটের দিন বিকেল থেকে আন্দোলন করে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা। এ উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন দলটির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মাহমুদ হাসান। অন্য চার প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির (জাপা) এ এইচ এম গোলাম শহীদ, বিকল্প ধারার জাহাঙ্গীর আলম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। চারজনই ভোট বর্জন করেছেন।

এ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে ইসি।