বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে শফিক মিয়া (২৮) ও হকার শিশু হোসাইন (১০) হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আরও দুটি হত্যা মামলা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শফিকের চাচাতো ভাই আবু হানিফ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় এবং হোসাইনের বাবা মানিক মিয়া বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি হত্যা মামলা করেন।
এ নিয়ে জেলার বিভিন্ন থানায় ১৩টি হত্যা মামলাসহ মোট ১৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১২টি হত্যা মামলাসহ ১৩টিতে শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়েছে।
শফিক হত্যা মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম (বাবু) ও গোলাম দস্তগীর গাজী, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ ১৫৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ৪ আগস্ট বিকেলে সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরে সিনহা গার্মেন্টসের সামনে আসামিদের নির্দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ও হামলা করা হয়। তখন শফিক মিয়ার বুকের ডান পাশে গুলি ঢুকে বের হয়ে যায়। এরপর আরও কয়েকটি গুলি লাগলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
অন্যদিকে ২১ জুলাই সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইলে হোসাইন (১০) গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম (বাবু), গোলাম দস্তগীর গাজী, কায়সার হাসনাত, শামীম ওসমানের ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমানসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পণ্ড করতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নির্দেশে আসামিরা অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। তখন তাঁর ছেলে (হোসাইন) ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ওই দিনই তিনি দেশ ছাড়েন। বর্তমানে ভারতের আশ্রয়ে আছেন তিনি।