রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ‘আখাউড়া-আগরতলা রেলপথে দুই দেশের (বাংলাদেশ ও ভারত) জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের নির্মাণকাজ শেষ হবে।’
বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্প পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন তিনি।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘সেপ্টেম্বরের পরে জাতীয় নির্বাচন রয়েছে। আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আনুষ্ঠানিকভাবে এই রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করবেন।’
আখাউড়া-আগরতলা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলপথ উল্লেখ করে নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ভারতের এই অঞ্চলে সাতটি প্রদেশ রয়েছে। বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে তারা যদি যোগাযোগ করে, তাহলে তাদের অনেক পথ কমে আসে। আগামী জুন মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা। তবে যেকোনো প্রকল্পেই একটি ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড (ত্রুটির দায় সময়কাল) থাকে। ডিফেক্ট লায়াবিলিটিসহ ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। তিন কিলোমিটার রেললাইন বসানো হয়েছে। মালামাল সব এসে গেছে। বাকি চার কিলোমিটার রেললাইন বসানো হবে। প্রথমে ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক) ট্রেন চালানো হবে। যাতে কোনো ত্রুটি না থাকে। এ কাজগুলো শেষ হলে প্রস্তাব যাবে। আশা করছি, এই বছরের মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করতে পারব।’
নূরুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডুয়েল গেজ। তবে ঢাকা থেকে যে ট্রেন আসবে, তা মিটারগেজ। পরিকল্পনা আছে, আমাদের সব রেলপথকে ব্রডগেজে রূপান্তর করব। আপাতত মিটারগেজ ট্রেন দিয়ে আখাউড়া-আগরতলা রেল যোগাযোগ চলবে। ভবিষ্যতে ব্রডগেজে রূপান্তরিত করা হবে। লাকসাম থেকে চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেলপথের দোহাজারী পর্যন্ত ডুয়েল গেজ হবে—এ পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের কাজ চলছে। অল্প দিনের মধ্যে টঙ্গী থেকে আখাউড়া পর্যন্ত আমরা ব্রডগেজ অর্থাৎ ডুয়েল গেজ রেললাইন স্থাপনের কাজ শুরু করতে পারব।’
রেলমন্ত্রী বলেন, রেলের যে পরিকল্পনা রয়েছে, তাতে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই আরও চার-পাঁচটি নতুন ট্রেন দেওয়া হবে। আগামী জুলাই মাসে আখাউড়া-লাকসাম ডাবল লাইন সম্পূর্ণ হবে। অর্থাৎ ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ডাবল লাইন হয়ে যাচ্ছে। এটা হয়ে গেলে নতুন যে মিটারগেজ কোচ এসেছে, সেগুলো সংযুক্ত করে বেশ কয়েকটি নতুন ট্রেন চালু করা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, কারণটা উদ্ঘাটন করা হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়েছে। ব্রডগেজে এ সমস্যা হবে না। ওই নির্দিষ্ট একটি জায়গায় কেন এটা হয়েছিল, প্রকৌশল বিভাগ সেটি উদ্ধার করেছে। ব্যবস্থা নিয়েছে। ভবিষ্যতে এ ধরনের বাকলিং হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।
এ সময় রেলমন্ত্রীর সঙ্গে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েল গেজ রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক (বাংলাদেশ অংশ) মো. আবু জাফর মিয়া, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেকসমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের কান্ট্রি ডিরেক্টর শরৎ শর্মা, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অংগ্যজাই মারমা উপস্থিত ছিলেন।