দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মাছ বাজারে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন এই বাগাড় মাছটি ৩৯ হাজার টাকায় কিনে নেন মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ। গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২৮ জুন
দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মাছ বাজারে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের মহাবিপন্ন এই বাগাড় মাছটি ৩৯ হাজার টাকায় কিনে নেন মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ। গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী, ২৮ জুন

গোয়ালন্দে জেলের জালে ৩০ কেজির মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ, ৩৯ হাজারে বিক্রি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় পদ্মা নদীতে এক জেলের জালে প্রায় ৩০ কেজি ওজনের একটি মহাবিপন্ন বাগাড় মাছ ধরা পড়েছে। আজ শুক্রবার সকালে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের মাছবাজারে নিলামের মাধ্যমে বাগাড়টি ৩৯ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ বাগাড়টি অন্যত্র বিক্রির জন্য কেনেন। যদিও মহাবিপন্ন হওয়ায় এই মাছ ধরা ও বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এক সপ্তাহ আগেও প্রায় ৩৫ কেজি ওজনের আরেকটি বাগাড় এই বাজারে বিক্রি হয়।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) তালিকা অনুযায়ী, বাগাড় মহাবিপন্ন প্রাণী। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী, বাগাড় মাছ ধরা, শিকার করা ও বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ। আইন থাকলেও বাস্তবায়ন না থাকায় বাগাড় শিকার ও বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না।

গোয়ালন্দে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজবাড়ী সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, বাগাড় বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২-এর আওতাভুক্ত হওয়ায় তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন। মাছটি মৎস্য সংরক্ষণ আইনের আওতায় আনতে বিভিন্ন মহলে উত্থাপন করেছেন। চাইলে বন বিভাগের সহায়তায় উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নাই। বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইনে থাকলে বন বিভাগের সহায়তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয় মৎস্যজীবীরা জানান, আজ সকালে গোয়ালন্দের কুশাহাটা এলাকায় পদ্মা নদীতে জাল ফেলেন পাবনার বাঘাবাড়ি এলাকার জেলে গোবিন্দ হালদার। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ঝাঁকি দিলে বুঝতে পারেন, বড় কিছু আটকা পড়েছে। পরে জাল নৌকায় তুলে দেখেন, বড় একটি বাগাড় মাছ। পরে বিক্রির জন্য দৌলতদিয়া ঘাটের মাছ বাজারে মোহন মণ্ডলের আড়তে আনেন। নিলামে ওঠানোর পর সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ ১ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে মাছটি কিনে নেন।

মাছ ব্যবসায়ী শাহজাহান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে বাগাড়টি তিনি ৩৯ হাজার টাকায় কিনেছেন। ওজন ২৯ কেজি ৬০০ গ্রাম। মাছটি ফেরিঘাটের পন্টুনে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে পরিচিত ব্যক্তিদের মধ্যে ক্রেতা খুঁজছেন। কেজিপ্রতি ১০০ টাকা লাভে বাগাড়টি বিক্রি করবেন। বাগাড় শিকার, প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রির ক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের বাধার সম্মুখীন হননি বলেও জানালেন।

বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস বলেন, বাগাড় মাছ তফসিলভুক্ত সংরক্ষিত বন্য প্রাণী। আইন অনুযায়ী, এটি শিকার ও কেনাবেচা দণ্ডনীয় অপরাধ।