জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জলাশয় ও লেক ভরাট করে ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিষয়ক সংগঠন পরিবেশ ফোরামের ব্যানারের এই কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধন শেষে রেজিস্ট্রার (রুটিন দায়িত্ব) এ বি এম আজিজুর রহমান বরাবর একটি স্মারকলিপি দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে বক্তারা জলাশয় ভরাট বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের সম্প্রসারিত ভবন নির্মাণ বন্ধের দাবি জানান। অবিলম্বে ওই ভবন নির্মাণের কাজ বন্ধ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মো. আবদুল্লাহর সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিবুল হাসান। রাকিবুল বলেন, ক্যাম্পাসে মেরুদণ্ডহীন শিক্ষকেরা জীববৈচিত্র্য ধ্বংস করে গেছেন। ছাত্রলীগের সহায়তায় তাঁরা জলাশয় ভরাট করেছেন, নির্বিচারে গাছ কেটেছেন। ক্যাম্পাসে মেরুদণ্ড সোজা এমন শিক্ষকদের নিয়ে অতি দ্রুত মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করে তারপর ভবন নির্মাণ শুরু করতে হবে।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. এনামউল্যা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের নামে যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করে টাকা লুটপাট করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় আইন না মেনে, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন না মেনে নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। গাণিতিক ও পদার্থ অনুষদের ভবনের জন্য জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে, সেটি ওই এলাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আশপাশের পানি সব ওই জলাশয়ে জমা হয়। সেটা ভরাট করা হলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। প্রাণপ্রকৃতি সংরক্ষণ করা জরুরি। যে সময়ে ছাত্ররা মার খাচ্ছেন, আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, সারা দেশ উত্তাল—সেই সময় বেছে নিয়ে জলাশয়টি ভরাট করা হচ্ছে।
পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আমির হোসেন ভূইয়া বলেন, ওই জলাশয় ভরাট করে ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ২০১৬ সালে। ওই সময় ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়েছিল। তবে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন উপাচার্য ফারজানা ইসলামের কাছে জলাশয় ভরাট না করতে কয়েকটি বিভাগ চিঠি দেয়। তারপর ওই স্থানে কাজ বন্ধ ছিল। কিন্তু দেশে অরাজকতা সৃষ্টিকারী লুটেরারা আবার রাতের আঁধারে ট্রাক নিয়ে লেক ভরাট করছে। অধ্যাপক নূরুল আলম (সদ্য সাবেক উপাচার্য) ছাত্রলীগ ও সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে এসে এখানে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। তিনি গর্হিত কাজ করে চলে গেছেন, কিন্তু তাঁর প্রেত্মাতা রয়ে গেছে।