সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সরকারি জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। জগন্নাথপুর পৌর শহরের হবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা মুহিতুর রহমান তালুকদার গতকাল সোমবার সুনামগঞ্জের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও দায়রা জজ আদালতে মামলাটি করেন।
বাদীর আইনজীবী আবুল আজাদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালত মামলাটি গ্রহণ করে দুর্নীতি দমন কমিশন সিলেট সমন্বিত জেলা কার্যালয়কে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে ছয়জন সরকারি কর্মকর্তা ও সাতজন সরকারি জমি দখলকারী রয়েছেন। এজাহারে সরকারি অপর কর্মকর্তারা হলেন জগন্নাথপুরের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম, সাবেক সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত, সাবেক সার্ভেয়ার আবদুল মোনায়েম খান, বর্তমান সার্ভেয়ার মুহিবুর রহমান ও ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা এ কে এম নাজমুল হুদা খান।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ইউএনও সাজেদুল ইসলাম বলেন, এমন অভিযোগের কোনো সত্যতা নেই। মামলার বিষয়ে এখনো তিনি কিছু জানেন না।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, জগন্নাথপুর পৌর এলাকার হবিবপুর মৌজার ১ নম্বর খতিয়ানের ১২৫ নম্বর দাগের ২২ শতক গোপাট (গবাদিপশুর চারণভূমি) ও রাস্তা শ্রেণির ভূমি ২০১৪ সালে হবিবপুর গ্রামের বাসিন্দা আলকাব আলী, সিজিল মিয়া, রুহিন মিয়া, সুজাত মিয়া, আবু শায়েক, আলী আকবর, জামাল মিয়া দখল করেন। এরপর এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি জায়গা উচ্ছেদের জন্য ২০২০ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর (আরডিসি) দখলকারীদের সাত দিনের মধ্যে উচ্ছেদের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী আইনজীবী মুহিতুর রহমান তালুকদার বলেন, উচ্ছেদের কোনো প্রতিকার না পেয়ে ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসকের কাছে আবারও আবেদন করেন। তখন জেলা প্রশাসক রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টরকে ব্যবস্থা নেওয়ার দায়িত্ব দেন। পরে রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর ২৪ অক্টোবর ইউএনও সাজেদুল ইসলামকে অবৈধ দখলকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
মুহিতুর রহমানের দাবি অনুযায়ী, এরপর ইউএনওর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি সার্ভেয়ার মুহিবুর রহমানের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বলেন। এ সময় সার্ভেয়ার দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। এতে প্রতিবাদ করলে তিনি পুলিশের ভয়ভীতি দেখান। নিরুপায়, হয়ে জনস্বার্থে সরকারি গোপাট, রাস্তা উদ্ধার ও দখলকারীদের সহায়তাকারী সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।