চট্টগ্রামের রাউজানে একটি পিচঢালাই সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট ও পুরোনো ইটের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া বালুর পরিবর্তে দেওয়া হচ্ছে মাটি। ওই সড়কের নাম বারেককুণ্ড সড়ক। এটি ডাবুয়া ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ডাবুয়া গ্রামে অবস্থিত।
অভিযুক্ত ঠিকাদার মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ডাবুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। সড়কের কাজে অনিয়মের বিষয়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরে (এলজিইডি) অভিযোগ করেছেন।
এলজিইডির অধীনে সড়কটির এক কিলোমিটার পিচঢালাই করা হচ্ছে। ইট বিছানো সড়কটি প্রায় দুই যুগ ধরে ভাঙাচোরা অবস্থায় ছিল।
গত রোববার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, সড়কে পিচঢালাইয়ের জন্য ইটের খোয়া ফেলা হয়েছে। এসব খোয়া সড়কটির পুরোনো ইটের। দুই পাশে বিছানো হয়েছে নিম্নমানের ইট। ১৫ থেকে ২০ শ্রমিক সড়কের কাজ করছেন।
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও তিন মিটার প্রস্থের সড়কটি ৯৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে। সড়কটির কাজ করছে তাসফিয়া এন্টারপ্রাইজ। এর স্বত্বাধিকারী ইউপি সদস্য মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সড়কটি নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা অজিত দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি ভাঙা ছিল, তা-ই কাজ হচ্ছে এতেই মানুষের স্বস্তি। নিম্নমানের কাজ হচ্ছে এটি দেখার পরও কেউ প্রতিবাদ করছেন না। একজন ঠিকাদার, যিনি জনপ্রতিনিধি, তিনি যদি এমন কাজ করেন, কী আর বলার থাকে!’
এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, সড়কের পিচঢালাইয়ে অনিয়মের ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ করার পর সদর দপ্তর থেকে এক প্রকৌশলী এসে বিষয়টি তদন্ত করে গেছেন। ঠিকাদারকেও এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে।
ডাবুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি অনেক কষ্টে স্থানীয় সংসদ সদস্যের হস্তক্ষেপে সড়কটি এলজিইডি থেকে পাস করিয়ে এনেছেন। কিন্তু সড়কটির কাজ চলছে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে।
জানতে চাইলে ঠিকাদার ও ইউপি সদস্য মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী কাজ করছি। সড়ক থেকে ওঠানো ইটগুলো কিনে আবার খোয়া হিসেবে ব্যবহার করছি। চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হওয়ায় তিনি ষড়যন্ত্র করছেন।’
এলজিইডির রাউজান উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, সরেজমিন গিয়ে ঠিকাদারকে সতর্ক করা হয়েছে। আবারও অনিয়মের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।