কুষ্টিয়ায় চাঁদাবাজি রোধে চালকলের মালিক ও এলাকাবাসীকে নিয়ে আয়োজিত এক সমাবেশ বক্তব্য দিচ্ছেন যুবদল নেতা আব্দুল মাজেদ
কুষ্টিয়ায় চাঁদাবাজি রোধে চালকলের মালিক ও এলাকাবাসীকে নিয়ে আয়োজিত এক সমাবেশ বক্তব্য দিচ্ছেন যুবদল নেতা আব্দুল মাজেদ

‘কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভাঙিছি’, যুবদল নেতার ভিডিও ভাইরাল

‘কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভাঙিছি’ বলে বক্তব্য দিয়েছেন কুষ্টিয়া জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল মাজেদ। তাঁর বক্তব্যের চার মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনা তৈরি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বুধবার বিকেলে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার খাজানগর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে চাঁদাবাজি রোধে চালকলের মালিক ও এলাকাবাসীকে নিয়ে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে আব্দুল মাজেদ ওই বক্তব্য দেন।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে মাজেদকে বলতে শোনা যায়, ‘শহীদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আজকে এই শেখ হাসিনার সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে। কুষ্টিয়ায় লাস্টের দিন (৫ আগস্ট) যেদিন ক্ষমতা হস্তান্তর হয়, সর্বপ্রথম, যারা এখানে আন্দোলনকারী আছে জিজ্ঞাসা করেন, কুষ্টিয়া থানা আমি মাজেদ নেতৃত্ব দিয়ে ভাঙিছি। এমন একটা দিন নাই, আমার তিনটা ছেলে, আমার পরিবার, আপনাদেরই চাচি, সে নিজেও এই আন্দোলন–সংগ্রামে যুক্ত হয়েছে। আপনারা আপনাদের ছেলেপেলেদের মারেও ঠেকাতে পারেন নাই। রক্তে যখন টান দেয়, তখন জনগণের স্রোত ঠেকানো যায় না। তাই জনগণের স্রোতে হাসিনা চলে গেছে।’

যুবদল নেতা আব্দুল মাজেদ বলেন, ‘আমি আপনাদের বলব, আপনারা এমন কিছু করবেন না, যাতে কুষ্টিয়ায় আমাদের দম বন্ধ না হয়ে যায়। ক্ষমতা চিরস্থায়ী না। জনগণ ভোট না দিলে বিএনপি সরকার গঠন করতে পারবে না। কিন্তু আমাদের দম যেন বন্ধ না হয়। আতা–হানিফের মতো, খুনি হাসিনার মতো যেন পালাতে না হয়।’

বক্তৃতার বিষয়ে জানতে জেলা যুবদলের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল মাজেদের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়। এ জন্য তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই সমাবেশে অংশ নেওয়া জেলা বিএনপির এক নেতা আব্দুল মাজেদের এমন বক্তৃতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানায় ৫ আগস্ট হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার কয়েক দিন পর তোলা

জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই ধরনের বক্তব্য যদি তিনি (মাজেদ) দিয়ে থাকেন, তাহলে ঠিক করেননি। বিষয়টি কেন্দ্রকে জানানো হবে। কেন্দ্র নির্দেশ দিলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর কুষ্টিয়া মডেল থানায় হামলা চালায় হাজারো লোক। এ সময় ব্যাপক ভাঙচুর, অস্ত্র লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় ৯ আগস্ট কুষ্টিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) এস এম আব্দুল আলিম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ হাজার জনকে আসামি করা হয়।

তবে ঘটনার এক মাস পার হলেও মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আসামিদের শনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ।