রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ভবনের ধসে পড়া অংশে কাজ বন্ধ আছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান ভবনের ধসে পড়া অংশে কাজ বন্ধ আছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে

চিঠি পৌঁছায়নি, তাই ভবন ধসের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়নি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ১০ তলা শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান আবাসিক হলের একটি অংশ ধসে পড়ার ঘটনা তদন্তে গত মঙ্গলবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। তবে ঘটনার তিন দিন পার হলেও আজ শনিবার দুপুর পর্যন্ত তদন্ত কমিটির কাছে চিঠি পৌঁছায়নি। কমিটির সদস্যরা বলছেন, আনুষ্ঠানিকভাবে এখন পর্যন্ত তাঁরা কোনো চিঠি পাননি। তাই এখনো তদন্তের কাজ শুরু করতে পারেননি।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামান সরকার বলেন, তাঁরা আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি পাননি। তিনি রাজশাহীর বাইরে আছেন। চিঠি পেলে তদন্তের কাজ শুরু করবেন।

কমিটির সদস্য মো. ইমরুল হাসান বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি ছুটিতে ছিলেন। আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি এসেছে কি না, এ বিষয়ে বলতে পারছেন না। তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে আগামীকাল (রোববার) যেহেতু কর্মদিবস আছে, কাল হয়তো কোনো নির্দেশনা আসবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এখনো অফিস করতে পারেননি। তদন্ত কমিটির চিঠি তাঁর মাধ্যমেই পৌঁছাবে। চিঠির কাজ চলছে। আজ বিকেলে কিংবা আগামীকাল সকালে চিঠি ইস্যু করা হবে।

মঙ্গলবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলের সামনে নির্মাণাধীন শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান হলের ভবনের একাংশ ধসে পড়ে। এ ঘটনায় ৯ জন আহত হন। সেদিন রাত আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধারকাজ শেষ করে। ওই দিন রাতেই এক জরুরি সভা ডেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আজ সকালে নির্মাণাধীন ওই ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ধসে পড়া ভবনে কোনো শ্রমিক নেই। কাজ বন্ধ আছে। তবে ভবনের অন্য অংশে ১০ তলায় কাজ চলছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার শ্রমিকেরা ধসে পড়া ভবনের বিভিন্ন জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছিলেন। এতে আলামত নষ্ট হয়ে যেতে পারে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হওয়ায় সেই কাজ বন্ধ রেখেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।

নির্মাণাধীন ভবন ধসে পড়ার পর ওই ভবনের নিরাপত্তাকর্মীদের বদলি করা হয়েছে। বর্তমানে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত তিন-চারজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ভবনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আগের নিরাপত্তাকর্মীদের বদলি করা হয়েছে। তাঁরা রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) থেকে এসেছেন। সেখানে তাঁদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের কাজ চলছে। ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ তদন্ত করতে আসেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড রূপপুরের ‘বালিশ-কাণ্ড’ ঘটনায় আলোচিত। বিভিন্ন সময়ে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে।