কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার সিংপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধ হাটবাজার ও জলমহাল দখলের অভিযোগ তুলে তাঁকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। তবে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা হারুন অর রশিদ দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আজ শুক্রবার বিকেল চারটায় সিংপুর বাজারে ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি হারুন অর রশিদকে সিংপুরে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়।
সিংপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. মুক্তার উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, দলীয় শৃঙ্খলা ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশ অমান্য করে সিংপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলীকে সঙ্গে নিয়ে নদী ও বিভিন্ন জলমহাল দখল, অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত।
ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিরুজ্জামান বলেন, ‘স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে আমার নামে তিনটি মামলা হয়েছে। ৫ আগস্টের আগে তিন মাস আট দিন জেল খেটেছি। আমার মতো ইউনিয়ন বিএনপির আরও অনেক নেতার নামে মামলা হয়েছে। সবাইকে জেল খাটতে হয়েছে। অথচ আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে চলায় তাঁর নামে কোনো মামলা হয়নি। ইউনিয়নের বাকি সব নেতা আন্দোলনে থাকলেও গত ১৬ বছরে হারুনকে আমরা রাজপথে দেখিনি। ৫ আগস্টের পর তিনি সগৌরব এলাকায় ফিরে দখলবাজি শুরু করেন। সুদিন আসছে দেখে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। আমরা উপজেলা ও জেলা কমিটিকে বিষয়টি জানালেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাই সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।’
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক মুকসুদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি আছে। ইউনিয়নের আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে প্রায় দুই বছর। এর মধ্যে হারুন একটিও দলীয় সভা ডাকেননি। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতিকে নিয়ে বিভিন্ন হাটবাজার, ঘাট ও জলমহাল দখলে নিয়েছেন হারুন। তাঁর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে হারুনের বহিষ্কার দাবি করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ফরিদ উদ্দিন, বর্তমান যুগ্ম আহ্বায়ক ইসহাক মিয়া, সাকির উদ্দিন, রফিকুল ইসলাম, মো. কাওসার, আবদুল কাইয়ুম, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক খায়রুজ্জামান, যুবদল নেতা মমিনসহ ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তবে আহ্বায়ক হারুন অর রশিদ মুঠোফোনে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাকে দল থেকে সরানোর জন্য তারা ষড়যন্ত্র করছে। আমি আন্দোলন-সংগ্রামে ছিলাম; বরং যারা সংবাদ সম্মেলন করেছে, তারা গত ১৬ বছর আন্দোলনে ছিল না। আমার বিরুদ্ধে দখল নিয়ে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে, সেগুলো ভিত্তিহীন।’
জানতে চাইলে নিকলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বদরুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, সিংপুর ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিএনপি নেতারা কিছু অভিযোগ করেছেন, সেগুলো তিনি শুনেছেন। তবে লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো পাননি। লিখিত পেলে জেলা কমিটির কাছে পাঠাবেন এবং অভিযোগের সত্যতা পেলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।