ময়মনসিংহে গ্যাসলাইন ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। লাইন মেরামতের কাজ চলছে
ময়মনসিংহে গ্যাসলাইন ফেটে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। লাইন মেরামতের কাজ চলছে

ময়মনসিংহে আঘাতে ফেটেছে গ্যাসলাইন, সরবরাহ বন্ধে গ্রাহকের দুর্ভোগ

ময়মনসিংহের ত্রিশালে ঢাকা-ময়মনসিংহ তিতাস গ্যাস সঞ্চালন লাইন ফেটে গেছে। চীনের একটি কোম্পানি পাইলিংয়ের কাজ করার সময় গ্যাসের লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে গতকাল সোমবার রাত ১১টা থেকে ময়মনসিংহ অঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল নাগাদ মেরামত শেষে সরবরাহ চালুর আশা করছে কর্তৃপক্ষ। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় আবাসিক গ্রাহকদের পাশাপাশি বাণিজ্যিক গ্রাহক ও সিএনজি পাম্পগুলো গ্যাস পাচ্ছে না।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের নারায়ণপুর গ্রামে মিনিস্টার হাইটেক পার্কের পাশে একটি চায়না কোম্পানির পাইলিং করতে গিয়ে সঞ্চালন লাইনে আঘাত লেগে ফেটে গেছে। গতকাল সকাল সাড়ে আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। দিনভর গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক রাখলেও মেরামতকাজের জন্য রাত ১১টার পর গ্যাসলাইনে সরবরাহ বন্ধ করা হয় বলে জানান তিতাস গ্যাস কোম্পানি ময়মনসিংহের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) প্রকৌশলী কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান।

আজ সকাল ১০টার দিকে কাজী মোহাম্মদ সাইদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাস সঞ্চালন লাইনটি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। বিকেল নাগাদ মেরামতকাজ শেষ হতে পারে। আমাদেরকে না জানিয়ে কোম্পানিটি আমাদের জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি করে গ্যাসলাইন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। গ্রাহকসেবা চালু হওয়ার পর ক্ষতিপূরণ আদায়ের কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

রাত থেকে গ্যাসলাইনে সরবরাহ বন্ধ থাকায় ময়মনসিংহ নগরের গ্রাহকেরা বিপাকে পড়েছেন। নগরীর নতুনবাজার এলাকার বাসিন্দা সাদিয়া হক বলেন, গ্যাস না থাকায় বাসায় রান্না বন্ধ। বাইরে থেকে খাবার এনে সকালের নাশতা চালানো হয়েছে।

ময়মনসিংহ শহরের ১০টি গ্যাসভিত্তিক সিএনজি পাম্পে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় গাড়ি চালকেরা বিপাকে পড়েছেন। একটি বেসরকারি কোম্পানির গাড়ি চালান আশরাফ হোসেন। তিনি বলেন, গ্যাস না থাকায় বিকল্প উপায় হিসেবে তেল দিয়ে চালাতে হচ্ছে। অনেক গাড়ি গ্যাসের জন্য পাম্পগুলোতে অবস্থান করছে।

তিতাসের ময়মনসিংহের আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী সুরঞ্জিত কুমার দে বলেন, গ্যাস সঞ্চালন লাইনে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভালুকা, ময়মনসিংহ নগরী, মুক্তাগাছা, শম্ভুগঞ্জ, নেত্রকোনা এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এখানে আবাসিক গ্রাহক ৪০ হাজার, বাণিজ্যিক গ্রাহক ২৫০ ও সিএনজি পাম্প ১৩টি। গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় রুরাল পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (আরপিসিএল) শম্ভুগঞ্জ বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রটিও গ্যাস পাচ্ছে না।

গতকাল সোমবার সকালে এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি খুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পাইপের অংশ বের করা হয়। পাইপ কেটে নতুন করে জোড়া লাগানো শেষে সরবরাহ চালু হবে বলে জানান তিতাসের ব্যবস্থাপক (অপারেশন) হিল্টন পাল। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সরবরাহ লাইনটি মেরামত শেষ করতে সন্ধ্যা হয়ে যেতে পারে। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সরবরাহ লাইন চালু হবে। লাইনটি ফেটে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনো নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।