ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানকে এবার সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. শাহানুল করিম। গতকাল রোববার শাহানুল দলীয় নেতা–কর্মীদের নিয়ে একরামুজ্জামানকে বাসায় গিয়ে তাঁর এই সমর্থনের কথা জানান।
শাহানুল করিম স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ সময় স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ টি এম মনিরুজ্জামানসহ জাতীয় পার্টির নেতা–কর্মীরা উপস্থতি ছিলেন।
একরামুজ্জামানের বাসায় জাতীয় পার্টির এই প্রার্থী বলেন, ‘দেখলাম মানুষের মধ্যে আমাদের প্রিয় বড় ভাই সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামানকে নিয়ে একটি উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। আমার মূল বক্তব্য, রাজনীতি করি অধিকারবঞ্চিত মানুষ ও তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য। আমি দেখলাম, মানুষের যে উৎসাহ, সেই উৎসাহ বেশির ভাগ অসহায় মানুষের আমার বড় ভাই একরামুজ্জামান সুখন ভাইকে নিয়ে। আমি পর্যবেক্ষণ করেছি। আমি কিন্তু প্রচারণায় নামি নাই। কারণ, আমি দেখতে চাচ্ছিলাম মানুষ যে দিকে, আমার মূল বক্তব্য হলো কারও না কারও মাধ্যমে মানুষের উপকার হলেই আমি এই কাজটা করতাম। আমি দেখলাম, তিনি অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন লোকজন, বাংলাদেশের মধ্যে দু-তিনজনের মধ্যে একজন এবং ভালো মানুষ। ওনার কাছে যতবার গিয়েছি, নিজের আপন ছোট ভাইয়ের মতো আদর করেছেন। ২০০১ সালে তিনি নির্বাচন করেছেন। আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামিন ওনাকে অনেক কিছু দিয়েছেন। কিন্তু মানুষের মনের তো একটা শখ থাকে, এমপি হওয়ার একটা বাসনা থাকে। এমপি না হলেও ওনার যোগ্যতা আছে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার। হাজার হাজার মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন-কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। যেটা অন্য কোনো প্রার্থী কিন্তু করে নাই। করতে পারেও নাই। তাদের সেই যোগ্যতা আল্লাহ দেয়ও নাই।
মো. শাহানুল করিম আরও বলেন, ‘আমি একরামুজ্জামান ভাইকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। ভাই একরামুজ্জামান এমপি নির্বাচিত হলে সমাজের উপকার হবে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জাতীয় পার্টির সুখ-দুঃখের বিষয়গুলো আমার কাছে বললে, ভাইয়ের কাছে বলব এবং ভাই সেটা সমাধান করে দেবেন। অনেক নেতা হাঙ্কুপাঙ্কু কথা বলে কিন্তু ভাই সহজ-সরলভাবে ও নীরবে সুন্দর করে বুঝিয়ে দেন। ভাইকে নির্বাচিত করতে পারলেই আমাদের মূল উদ্দেশ্য জনগণের কল্যাণ সাধিত হবে। সব নেতা–কর্মীর একত্র করে ভোট কাস্টিং করতে হবে। যা কিছু লাগে আমি দেব।’
এর আগে এই আসনে আওয়ামী লীগের তিনজন মনোনয়নপ্রত্যাশীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সাবেক একাধিক নেতা-কর্মী এবং বর্তমান ও সাবেক একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান স্বতন্ত্র প্রার্থী একরামুজ্জামানকে সমর্থন দিয়ে তাঁর পক্ষে কাজ করছেন। একরামুজ্জামান আরএকে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালন। এই আসনে একরামুজ্জামান, আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেনসহ চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মো. নাজির মিয়া, তাঁর স্ত্রী নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রোমা আক্তার, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ টি এম মনিরুজ্জামান সরকার। তাঁরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে তাঁরা স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। রোমা আক্তার ও মনিরুজ্জামান সরকার মনোনয়নপত্র জমা দিলেও যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েন।