ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে বের হয়েছেন অনেকে। সকাল থেকে ভিড় দেখা গেছে পর্যটনকেন্দ্রগুলোয়। আজ সকালে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে।
ঈদ উপলক্ষে ঘুরতে বের হয়েছেন অনেকে। সকাল থেকে ভিড় দেখা গেছে পর্যটনকেন্দ্রগুলোয়। আজ সকালে আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে।

খাগড়াছড়িতে ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের ভিড় বেড়েছে, খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরা

নদী, পাহাড় ও ঝরনা দেখতে পর্যটকের অন্যতম পছন্দের জায়গা খাগড়াছড়ি। আলুটিলা, মায়াবিনী লেক, জেলা পরিষদ পার্ক নিয়ে তাঁদের সারা বছরই আগ্রহ থাকে। আর রাঙামাটির সাজেক যেতে হয় খাগড়াছড়ির রাস্তা দিয়েই। ঈদের দিন পর্যটনকেন্দ্রগুলো প্রায় পর্যটকশূন্য থাকলেও ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে পর্যটকের ঢল নেমেছে। রেস্তোরাঁগুলোয় ভিড় দেখা গেছে। এ ছাড়া পিকআপ, জিপসহ অন্য গাড়িগুলোতেও আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত বুকিং দেওয়া আছে। তবে হোটেলগুলোয় পর্যটকদের ভিড় নেই বললেই চলে।

পার্বত্য যানবাহন মালিক সমিতির সভাপতি নির্নিমেষ দেওয়ান বলেন, আজ মঙ্গলবার থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত তাঁদের লাইনের সব গাড়ি বুকিং করেছেন পর্যটকেরা। আজ সকালেও ১০০টির বেশি গাড়ি সাজেকে গেছে। দুপুরের দিকে বুকিং আছে আরও ৫০টি গাড়ির।

তবে হোটেল–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাধারণত ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে পর্যটকেরা রাতে কিংবা ভোরে এসে গাড়িতে চড়ে সাজেকের উদ্দেশে রওনা হন। পরদিন সাজেক থেকে দুপুরে ফিরে বিকেলবেলায় খাগড়াছড়ি পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় ঘুরে রাতের গাড়িতে আবার গন্তব্যে ফিরে যান। তাই পর্যটকেরা খাগড়াছড়িতে রাত্রি যাপন করেন না।

খাগড়াছড়ি অন্যতম হোটেল গ্রিন স্টারের মালিক কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া বলেন, পর্যটকদের কথা চিন্তা করে ১০ থেকে ২০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছেন তাঁরা। তবুও তাঁরা খাগড়াছড়িতে থাকতে চান না। কেননা, খাগড়াছড়িতে অবস্থান করে বেড়ানোর মতো তেমন কোনো পর্যটনকেন্দ্র নেই। হোটেল গাইরিংয়ের ব্যবস্থাপক প্রশান্ত ত্রিপুরাও জানালেন একই কথা। তাঁদের হোটেলেও বুকিং তেমন নেই।

ঈদের দিন স্থানীয় লোকজন ছাড়া বাইরে কোনো পর্যটক তেমন আসেনি। আজ সকাল থেকে পর্যটকের আনাগোনা শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টার আগে এক হাজারের মতো পর্যটক সেখানে এসেছেন।
কোকোনাথ ত্রিপুরা, আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের টিকিট বিক্রেতা

আজ সকালে আলুটিলায় পর্যটকের ভিড় দেখা গেছে। সেখানে কথা হয় ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মোহাম্মদ নাঈম, দীপ্ত চক্রবর্তী, অলোক দাশসহ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া একদল শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তাঁরা বলেন, ঈদের রাতে ২৫ জন বন্ধু মিলে খাগড়াছড়ি ঘুরতে এসেছেন। সারা দিন খাগড়াছড়ির দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরে রাতেই আবার ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন।

আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রের টিকিট বিক্রেতা কোকোনাথ ত্রিপুরা বলেন, ঈদের দিন স্থানীয় লোকজন ছাড়া বাইরে কোনো পর্যটক তেমন আসেনি। আজ সকাল থেকে পর্যটকের আনাগোনা শুরু হয়েছে। দুপুর ১২টার আগে এক হাজারের মতো পর্যটক সেখানে এসেছেন।

পর্যটকদের আনাগোনায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে জেলার রেস্তোরাঁমালিকেরা। রেস্তোরাঁ সিস্টেমের কর্মচারী আচিং মারমা বলেন, তাঁদের রেস্টুরেন্টে আজ থেকে আগামী শনিবার পর্যন্ত খাবারের অর্ডার করা আছে।

পর্যটক আসায় খুশি ব্যবসায়ীরাও। খাগড়াছড়ি শহরের নারকেলবাগান এলাকার পাহাড়িকা হ্যান্ডি ক্র্যাফট অ্যান্ড বর্মিজ স্টোরের বিক্রয়কর্মী মেকি চাকমা বলেন, পর্যটকেরা আসতে শুরু করায় বিক্রি বেড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা বিক্রি হচ্ছে।    

খাগড়াছড়িতে অতিরিক্ত পর্যটক হলেও নিরাপত্তার কোনো কমতি নেই বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলার পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় ২৪ ঘণ্টাই পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।