নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে পারিবারিক কলহের জের ধরে শান্ত মিয়া (৫০) নামের এক ব্যক্তির কান কামড়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছেন তাঁর স্ত্রী রাহেলা বেগম (৪২)। কানের বিচ্ছিন্ন অংশ আর জোড়া লাগাতে পারেননি চিকিৎসকেরা। শান্ত মিয়া এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ভুক্তভোগী ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, শান্ত মিয়া ও তাঁর স্ত্রীর মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া লেগে থাকে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া লাগে। একপর্যায়ে স্ত্রী রাহেলা ক্ষিপ্ত হয়ে শান্ত মিয়ার কানে জোরে কামড় দেন। এতে শান্ত মিয়ার বাঁ কান প্রায় পুরোটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। এ সময় কানের বিচ্ছিন্ন অংশটুকুও নিয়ে যাওয়া হয়। তবে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা চেষ্টা করে কানের অংশ স্থাপন করতে পারেননি। সর্বশেষ সেখান থেকে চিকিৎসা শেষে গতকাল শুক্রবার শান্ত মিয়াকে আবার মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী শান্ত মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার স্ত্রী রাগের মাথায় আমাকে মারধর করে আমার বাঁ কানটা কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেছে। ময়মনসিংহ গিয়েও আর লাগানো যায়নি। স্ত্রীর সঙ্গে দুই যুগের বেশি সময়ের সংসারজীবন। সব সময়ই সে আমার সঙ্গে ঝগড়া করে। কিছুদিন আগে বড় ছেলে আমাকে না জানিয়ে বিয়া কইরা ফেলছে। কষ্ট করে ছেলেডারে পড়াশোনা করাইছি, তাই তার ভালামন্দ জানার অধিকার আমার আছে। এসব জিজ্ঞাসা করতে গেলে আমার স্ত্রী আর ছেলে মিইল্লা আমার সঙ্গে ঝগড়া করে। পরে স্ত্রী কানে কামড় দিয়া ছিঁড়ে ফেলছে। আমি খুঁত হইয়া গেলাম। এখনো থানা-পুলিশে অভিযোগ করিনি। একটু সুস্থ হই, পরে যা যা করা দরকার, সব করবাম।’
মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা পার্থ সরকার জানান, শান্ত মিয়ার কানের বেশির ভাই কামড়ে আলাদা করে ফেলা হয়েছে। শুধু নিচের কিছু অংশ রয়েছে। এটা একটা অঙ্গহানির ঘটনা। তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু সেখানেও কানের কাটা অংশটুকু স্থাপন করা যায়নি। এখন আর কিছু করার নেই। তাঁর সুস্থ হতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে।
মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ ঘটনায় থানায় কেউ এখনো অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শান্ত মিয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে স্ত্রী রাহেলা বেগমের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁদের ছেলে মো. সাদেক মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা-মা প্রায় সময়ই ঝগড়া করে। তাদের ঝগড়া দেখতে আর ভালো লাগে না। সেই জন্য আমি নানার বাড়িতে থাকি।’