বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি মিয়ানমারের সীমান্তচৌকি এলাকায় আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। গোলাগুলির প্রচণ্ড শব্দে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এই পরিস্থিতিতে আজ বেলা একটার দিকে উপজেলার সীমান্তবর্তী পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুমের তুমব্রু ও বাইশফাঁড়ি সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) দুটি সীমান্তচৌকি রয়েছে। তুমব্রু সীমান্তের অপর পাশে ঢেঁকিবুনিয়া ও বাইশফাঁড়ির বিপরীতে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প। এ দুটি এলাকায় সকাল ১০টার দিকে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়। এ সময় মর্টার শেলের আওয়াজও শোনা যায়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলির শব্দ শুনতে পান সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের লোকজন। বিজিপির ঢেঁকিবুনিয়া সীমান্তচৌকিতে গোলাগুলির সময় বিস্ফোরিত মর্টার শেলের অংশ শূন্যরেখায় এসে পড়ে। গত শনিবারও ওই দুই সীমান্তচৌকি এলাকায় গোলাগুলি হয়েছিল।
সীমান্তের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ঘুমধুম সীমান্তের শূন্যরেখার কাছে থাকা ঢেঁকিবুনিয়া ও তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ছাড়া আশপাশে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির প্রায় সব কটি ক্যাম্প বিদ্রোহী গোষ্ঠী দখল করে নিয়েছে। ওই দুটি সীমান্তচৌকি দখলের জন্য বিদ্রোহীরা চেষ্টা চালাচ্ছেন।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা বলেন, সকালে মিয়ানমারের ভেতরে গোলাগুলির সংবাদ সীমান্তের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁকে অবহিত করেন। আবারও গোলাগুলি হতে পারে, এমন আশঙ্কায় বেলা একটার দিকে পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়। তবে কোনো বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়নি। পরিস্থিতি শান্ত থাকলে আগামীকাল মঙ্গলবার সব বিদ্যালয় যথারীতি খোলা থাকবে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাকারিয়া বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলির ঘটনায় সীমান্ত এলাকার লোকজনকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। দুপুরে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি দেওয়া হয়। সীমান্তে বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।
থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের একদল নাগরিক পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাকান আর্মি রোববার রাখাইন রাজ্যের মিনবিয়া শহরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৩৮০ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর দখলে নিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, রাখাইনের ম্রাউক ইউ, কিউকটা ও রাথেডং এলাকায় দুই পক্ষের লড়াই চলছে।
আরাকান আর্মির এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘জান্তার আর আমাদের সঙ্গে লড়াই করার সামর্থ্য নেই। তারা এখন আরও বেশি গোলা নিক্ষেপ ও আকাশ থেকে বোমা হামলা চালাচ্ছে।’