আড়াই ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় কারাবন্দী রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ (চাঁদ)। আজ রোববার বেলা একটায় চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে তাঁর মায়ের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে আবু সাঈদের মায়ের দাফন সম্পন্ন করা হয়। বেলা দেড়টার দিকে দাফন শেষে পুলিশের প্রিজন ভ্যানে করে তাঁকে আবার রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার সকাল ৯টায় আবু সাঈদের মা আশরাফুন্নেছা ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। মায়ের মৃত্যুর পর জানাজায় অংশ নিতে প্যারোলে মুক্তির জন্য আবু সাঈদের পক্ষ থেকে তাঁর আইনজীবী আবেদন করেন। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আড়াই ঘণ্টার জন্য তাঁর প্যারোল মঞ্জুর করেন।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ পাহারায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আবু সাঈদকে চারঘাট উপজেলার মাড়িয়া গ্রামে নিয়ে আসা হয়। মায়ের জানাজা ও দাফন কাজে অংশ নিতে আবু সাঈদের বাড়িতে ফেরার খবরে দলীয় নেতা-কর্মীসহ স্থানীয় অনেক মানুষ সমবেত হন। বিএনপি নেতা বাড়িতে পৌঁছালে নেতাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান (মিনু) বলেন, মায়ের মৃত্যুর খবরে বিএনপি নেতা আবু সাঈদ চাঁদকে আড়াই ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। জানাজা শেষে আবার তাঁকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। মায়ের মৃত্যুর পর প্যারোলে মুক্তি দিতেও কালক্ষেপণ করা হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় সুষ্ঠু পরিবেশে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
জানাজায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হক, রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. মোসাদ্দেক হোসেন (বুলবুল), জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইফুল ইসলাম, চারঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফকরুল ইসলাম, সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নাজমুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকিরুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শামীম সরকার, জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি তরিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
গত বছরের ১৯ মে রাজশাহীর বানেশ্বরে বিএনপির এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এরপর ২৫ মে তাঁকে গ্রেপ্তার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশ। এর পর থেকে তিনি কারাগারে। এর মধ্যে গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর অর্থ আত্মসাতের মামলায় আবু সাঈদকে তিন বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন রাজশাহীর একটি আদালত। একই সঙ্গে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।